ফাইল চিত্র।
আসন্ন নির্বাচন নয়। বিধাননগর পুর এলাকার বাসিন্দাদের চিন্তায় রেখেছে ক্রমশ বাড়তে থাকা সংক্রমণ। বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, বুধবার রাত পর্যন্ত পুর এলাকায় প্রায় ৭০০ জন সংক্রমিত হয়েছেন। অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা প্রায় দু’হাজার। তবে পুর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, এখনও পর্যন্ত হাসপাতাল বা সেফ হোমে ভর্তি থেকে চিকিৎসা করানো রোগীর সংখ্যা অনেক কম। অক্সিজেনের চাহিদাও তত বাড়েনি। যা খানিকটা হলেও আশা জোগাচ্ছে। যদিও বাসিন্দাদের বড় অংশের কথায়, এই অবস্থায় নির্বাচন করা ঝুঁকির হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কারণ, ভোট ঘিরে বহু মানুষের জমায়েত হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
অবস্থার গুরুত্ব বুঝে সব দলই নিয়ন্ত্রিত প্রচারের পথে হাঁটছে। ইতিমধ্যেই অনলাইনে বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিধাননগরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী পাঁচ জন কর্মীকে নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন প্রার্থীরা। ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল
প্রার্থী রঞ্জন পোদ্দার জানান, তিনি যে ব্লকে প্রচারে যাচ্ছেন, সেখানকার পাঁচ জন কর্মী তাঁর সঙ্গে থাকছেন। বাইরের কেউ যাতে না থাকে, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। বিভিন্ন ব্লকে বাসিন্দাদের নিয়ে তৈরি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রচার চালানো হচ্ছে। পথসভাতেও দূরত্ব-বিধি মেনে নির্দিষ্ট সংখ্যক লোক থাকবেন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ভোট হওয়ার পক্ষে মত নেই বিধাননগরের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের বাম প্রার্থী অরিন্দম দাসের। তাঁর কথায়, ‘‘আগে জীবন, পরে ভোট। তাই শুধু ভোট চাইতেই যাচ্ছি না, কারও কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না, কী ধরনের সহায়তা লাগবে— সে সবও জানার চেষ্টা করছি।’’
যদিও বাসিন্দাদের একাংশের প্রশ্ন, রাজনৈতিক দলগুলি প্রচার নিয়ে ব্যস্ত। শুধুমাত্র প্রশাসনিক আধিকারিক এবং কর্মীদের দিয়ে ক্রমশ বাড়তে থাকা এই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ কি আদৌ সম্ভব? এই পরিপ্রেক্ষিতে বিধাননগরের পুর কমিশনার দেবাশিস ঘোষ জানান, প্রশাসনিক ভাবে সব ধরনের সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ১৮টি কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হয়েছে। সংক্রমিত বাড়ি এবং তৎসংলগ্ন এলাকা, বাজার জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে। সেফ হোম খোলার বিষয়েও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। প্রাক্তন ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটরদের একাংশ জানাচ্ছেন, নির্বাচনী আচরণবিধি চালু থাকায় তাঁরা সরাসরি কাজ করতে না পারলেও পরোক্ষ ভাবে প্রতিনিয়ত করোনা নিয়ন্ত্রণের কাজে সহযোগিতা করার চেষ্টা করছেন।
পুরসভা সূত্রের খবর, ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪৩ হাজার লোক সংক্রমিত হয়েছেন। সুস্থ হয়েছেন প্রায় ৪১ হাজার।