এখানেই ধস নামে এবং মাটি চাপা পড়ে যান ছলমন। ফাইল চিত্র।
রাস্তা খুঁড়ে নিকাশির কাজ চলার সময়ে ধস নামায় মাটি চাপা পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় ফের প্রশ্ন উঠেছে, কোনও রকমসুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই কী ভাবে ওই শ্রমিক মাটির নীচে কাজ করছিলেন? নিকাশি নালার ওই কাজকলকাতা পুরসভার তত্ত্বাবধানে হচ্ছিল। তাই প্রশ্ন উঠেছে, পুরসভার গাফিলতিতেই কি এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল?
মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। পুরসভা ওই শ্রমিকের পরিবারের পাশে আছে। কিছু লোক শ্রমিকদের উস্কানিদিয়ে কাজ বন্ধ করিয়ে দিয়েছেন। সেটা ঠিক হয়ে যাবে। এই ঘটনায়তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। পুরসভার যে কোনও কর্মীর অসুবিধায় পাশে আছি।’’ মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহের অবশ্য দাবি, ‘‘সুরক্ষা-বিধি মেনেই কাজ হচ্ছিল। সেফটি বেল্ট লাগানো হয় ম্যানহোলের ভিতরে বা নিকাশি নালার মধ্যে কাজ করার সময়ে। যদিও এখনআর ম্যানহোলে নামতে হয় না। যন্ত্র দিয়েই কাজ হয়। এ ক্ষেত্রে মাটি খোঁড়ার পরে নীচে নেমেছিলেন ছালমান। তখন সেফটি বেল্টের প্রয়োজন হয় না। তাই ওঁর সেফটি বেল্ট ছিল না। তবে, দুর্ঘটনাটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’’
বুধবার রাত ১০টা নাগাদ বেনিয়াপুকুর থানার পার্ক সার্কাস এলাকায় রাস্তা খুঁড়ে নিকাশি নালার কাজ চলছিল। সেখানে কাজ করছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির বাসিন্দা ছালমান মল্লিক (১৮)। তাঁর আত্মীয়দের দাবি, মাটি খোঁড়ার কাজ হয়ে যাওয়ার পরেপ্রায় ১০-১৫ ফুট নীচে নেমেছিলেন তিনি। সেই সময়ে হঠাৎই ধস নামে। চাপা পড়ে যান ছালমান। গুরুতরজখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা ছালমানকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই তরুণের বাবা-মা, দাদা এবং দুই দিদি আছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে ছালমানের এক আত্মীয় আমির আলি মোল্লা বলেন, ‘‘ছালমান যদি সেফটি বেল্ট পরে নীচে নামত, তা হলে হয়তো ওকে এমন বেঘোরে মরতে হত না।’’ আমিরের দাবি, মাটি কাটারপরে নিকাশি পাইপলাইন বসানোর আগে ছালমান নীচে নেমেছিলেন, যেখানে পাইপ বসানো হবে, সেই জায়গাটা সমান আছে কি না দেখে নিতে। তখনই হঠাৎ ধস নামে।আমির জানান, সেখানে যাঁরা কাজ করছিলেন, তাঁরাই প্রথমে চেষ্টা করেন ছালমানকে বার করে আনতে। কিন্তু তাঁরা ব্যর্থ হওয়ায় একটি জেসিবি মেশিন দিয়ে মাটি কেটে ওই তরুণকে বার করা হয়।