ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।
ধর্মের দোহাই বা লিঙ্গ পরিচয়ে কখনওই নিষ্কৃতি নয়। অন্যায় করলে শাস্তি হবেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কলকাতা পুরসভার শিক্ষা বিভাগের দুর্নীতি-কাণ্ডে অভিযুক্ত রুমানা খাতুনের করা ইমেল প্রসঙ্গে শুক্রবার এ কথা জানালেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
পুরসভার শিক্ষা বিভাগে ওই দুর্নীতির অভিযোগে তৎকালীন সিনিয়র এডুকেশন অফিসার রুমানা খাতুন-সহ আরও দুই প্রাক্তন আধিকারিককে আগেই শো-কজ় করেছেন কর্তৃপক্ষ। চলতি মাসের ৫ তারিখে রুমানা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইমেলে অভিযোগ করেন, সংখ্যালঘু মহিলা আধিকারিক বলে তাঁকে হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। এই চিঠির প্রসঙ্গে এ দিন পুরভবনে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘অন্যায় করলে শাস্তি পেতে হবে। লিঙ্গ পরিচয় বা ধর্মের দোহাই দিয়ে নিস্তার মিলবে না। কোনও অভিযোগ জমা পড়লে পুর কমিশনারের কাজ হল তা যাচাই করে দেখা। তা সত্যি প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
প্রসঙ্গত, ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে কলকাতা পুরসভা পরিচালিত ৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শৌচাগার সংস্কারে ৩৮ লক্ষ টাকার গরমিল ধরা পড়ায় পুর ভিজিল্যান্স সংশ্লিষ্ট বিভাগের থেকে ইতিমধ্যেই রিপোর্ট তলব করেছে। পাশাপাশি, ওই সময়েই দরপত্র ছাড়া প্রায় দু’কোটি টাকার বর্ষাতি ও স্কুলপোশাক কেনার ক্ষেত্রে গরমিল সাম্প্রতিক পুর অডিটে প্রকাশ্যে এসেছে। গত ৫ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মেয়রের ওএসডি-র বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ এনেছিলেন অভিযুক্ত রুমানা। তাঁর দাবি, তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, মেয়র ও পুর কমিশনারের মতো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে টপকে রুমানা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লেখায় বেজায় ক্ষুব্ধ ফিরহাদ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা যে পদক্ষেপ করছি, তাতে অনেকের স্বার্থে লাগছে। জনগণের টাকা নয়ছয় করে কেউ পার পাবেন না। কমিশনার ও কর্মীদের কাছে স্পষ্ট নির্দেশ আছে, আইন অনুযায়ী কাজ করতে হবে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে যে কেউ চিঠি লিখতেই পারেন। তবে মানুষের স্বার্থে কাজ করাটাই আমাদের কাছে বড় কথা।’’