মঙ্গলালোক: মেট্রোর জন্য গঙ্গার নীচে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু হল শুক্রবার। তার আগে রামকৃষ্ণপুর ঘাটে হল পুজো ও আরতি। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
মেট্রো-সুড়ঙ্গের গঙ্গাপ্রবেশ বলে কথা!
তাই অনুষ্ঠানে আয়োজনের কোনও ত্রুটি রাখেননি কর্মকর্তারা। রামকৃষ্ণপুর ঘাটে গঙ্গাপুজোর জন্য খাস বেনারস থেকে আনা হয়েছিল পুরোহিতদের। গঙ্গা আরতির জন্য আনা হয়েছিল বড় বড় পিতলের প্রদীপ, চামর, ধুনুচি। ফুল-ফল, ধূপ-ধুনোর গন্ধ আর ছ’জন পুরোহিতের বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণে সাতসকালেই গঙ্গার পাড় হয়ে উঠেছিল আস্ত এক পূজাঙ্গন। যেখানে সমস্ত নিয়ম-আচার মেনে পুজো করলেন দেশি-বিদেশি ইঞ্জিনিয়ার ও সুড়ঙ্গ বিশেষজ্ঞেরা।
পূর্ব-নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী, এ দিন ছিল হাওড়া ময়দান থেকে আসা মেট্রোর সুড়ঙ্গপথের গঙ্গা স্পর্শ করার দিন।
কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন সূত্রে খবর, নদীর নীচে মেট্রোর সুড়ঙ্গ কাটার কাজ ভারতে যে হেতু এই প্রথম, তাই এ দিনটিকে ঘিরে মেট্রো নির্মাণকারী ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীরা যথেষ্ট উত্তেজিত ছিলেন। পাশাপাশি, এই দিনটি ছিল তামিল ভাষাভাষীদের নতুন বছরের প্রথম দিন। মেট্রো নির্মাণকারী ঠিকাদার সংস্থায় অনেকেই তামিলনাড়ুর। তাই এই দিনটিতেই পুজোর আয়োজন করা হয়। ঠিক হয়, পুজোপাট করেই সুড়ঙ্গ কাটার টানেল বোরিং মেশিন বা টিবিএম চালিয়ে গঙ্গার নীচে মাটি কাটার কাজ শুরু করা হবে।
এ দিন গঙ্গাপাড়ে পুজোপাট শুরু হয় সকাল সাতটার কিছু পরে। তার আগেই সেখানে উপস্থিত হন দেশ-বিদেশ থেকে থেকে আসা সুড়ঙ্গ বিশেষজ্ঞ, ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীরা। রীতিমতো বৈদিক ধর্মাচার মেনে পুজোয় বসেন দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসা সুড়ঙ্গ বিশেষজ্ঞ পল ব্যারেল্, উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ও টিবিএম অপারেটর দুর্গেশ তিওয়ারি এবং অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আসা টিবিএম ইঞ্জিনিয়ার আর শ্রীনিবাসন।
পুজোর পরে টম ব্যারেল বলেন, ‘‘আজ বিকেলের পরেই গঙ্গায় ঢুকে যাব আমরা। লাগানো হবে ৮১৫ নম্বর রিং (কংক্রিটের স্ল্যাব)। নদীর নীচে সুড়ঙ্গের জন্য এখন থেকেই বিশেষ ভাবে তৈরি এই কংক্রিটের রিং বসানোর কাজ শুরু হবে।’’
ওই সুড়ঙ্গ বিশেষজ্ঞ জানান, এখন যে হেতু গ্রীষ্মকাল, তাই গঙ্গায় জলস্তর অনেকটা নীচে। সেই কারণে জল পর্যন্ত পৌঁছতে আরও কয়েক দিন লাগবে। টিবিএম গঙ্গায় ঢুকবে বলে এ দিন সকাল থেকেই হাওড়া ময়দানের কাছে ‘ক্রসওভার পয়েন্ট’-এ অনুমতি ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। মাটি কাটার কাজ মাটির উপরে বসানো টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করে দর্শনার্থী অতিথিদের দেখানো হয়েছে।