মণ্ডপই হতে পারে মশার বংশবৃদ্ধির ঘর

মণ্ডপে জল জমলে সমস্যা কোথায়?

Advertisement

কৌশিক ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৩৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

সাধারণ মানুষকে ডেঙ্গি নিয়ে সচেতন করতে এ বার এগিয়ে এসেছে বেশির ভাগ পুজো কমিটি। অথচ মশাবাহিত রোগের উৎস যে পুজো মণ্ডপই হতে পারে, সে সম্পর্কে ওয়াকিবহাল কত জন? সেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতেই এ বার সরব হচ্ছেন বিভিন্ন পুজো কমিটির যৌথ মঞ্চ ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর প্রতিনিধিরা। শুধু মণ্ডপের আশপাশে জমে থাকা জল পরিষ্কার করাই নয়, মণ্ডপের বাঁশে যাতে কোনও ভাবে জল না জমে, তা নিয়ে সজাগ থাকতে তাঁরা নিজেরাই সব পুজো কমিটিকে নির্দেশ দিচ্ছেন। সংগঠনের সভাপতি কাজল সরকার বলেন, ‘‘উৎসবের মরসুমে সব চেয়ে বড় সমস্যা ডেঙ্গি। সে কারণে এই রোগ মোকাবিলায় বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের তরফে হোয়াটসঅ্যাপ করে সব পুজো কমিটিকে সচেতন করা হবে।’’

Advertisement

কাজলবাবু জানান, মশাবাহিত রোগ নিয়ে সচেতনতা অভিযানে অন্যতম হাতিয়ার এলাকার পুজো কমিটি এবং স্থানীয় ক্লাব। কলকাতা পুরসভার তরফে সচেতনতা অভিযান তো চলেই। এর পাশাপাশি শহরের পুজো কমিটিগুলিকে নিয়ে চালু হয়েছে ‘স্বাস্থ্যবান্ধব’ প্রতিযোগিতা। কিন্তু অভিযোগ, এত কিছু সত্ত্বেও অনেক পুজো সংগঠকের কাছে মণ্ডপের কাঠামো জল-মুক্ত করার বিষয়ে কোনও ধারণা নেই। সে কারণেই ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর এই উদ্যোগ।

মণ্ডপে জল জমলে সমস্যা কোথায়?

Advertisement

অধিকাংশ পুজো উদ্যোক্তা জানিয়েছেন, মণ্ডপে ঢোকার মুখে বা ভিতরে জল জমে থাকলে তা সহজে পরিষ্কার করা যায়। কিন্তু মণ্ডপ তৈরিতে যে বাঁশ ব্যবহৃত হয়, তার মাথার খোলা অংশে বৃষ্টির জল অনায়াসে জমে থাকতে পারে। সেই জল বেশি দিন থাকলে সেখানে মশার লার্ভা জন্মাতে পারে। এই বাঁশ পুজোর এক মাস আগে লাগানো হয়, খোলা হয় পুজো শেষের প্রায় দু’সপ্তাহ পরে। সে কারণে শহরের প্রতিটি পুজো কমিটির এই ব্যাপারে সজাগ হওয়া প্রয়োজন বলে সংগঠনের প্রতিনিধিদের মত।

দক্ষিণ কলকাতার ‘শিবমন্দির’ পুজো কমিটির সম্পাদক পার্থ ঘোষ বলছেন, ‘‘আমাদের পুজোয় ৫০ মাইক্রনের বেশি পুরু প্লাস্টিক দিয়ে বাঁশের উপরের খোলা মুখ বেঁধে রাখা হয়। আশপাশের পুজো কমিটিগুলিকেও আমি এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে বলেছি। আমরা গত তিন বছর ধরে এ ভাবেই মণ্ডপ তৈরি করছি।’’ দক্ষিণেরই আর এক পুজো ‘বাদামতলা আষাঢ় সঙ্ঘ’-এর সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরাও অনেক বার এই পদ্ধতি অনুসরণ করেছি। কিন্তু একটা সমস্যা হচ্ছে, পাখি এসে ওই প্লাস্টিকের ঢাকনা খুলে দেয়।’’ তবে বাঁশ দিয়েই ঢাকনা তৈরি করে খোলা জায়গা বন্ধ করার কথা ভাবা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সন্দীপবাবু।

‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’ সূত্রের খবর, শহরের বেশির ভাগ বড় পুজোই তাদের সংগঠনের অন্তর্গত। সেই সংখ্যা চারশোর কাছাকাছি। কিন্তু গোটা কলকাতা শহরে প্রায় ২৮০০ পুজো হয়। শহরতলিতে এই সংখ্যা আরও কিছুটা বেশি। তাদের সকলকে এই অভিযানে শামিল করা প্রয়োজন বলে জানাচ্ছে সংগঠন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement