কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের সংখ্যা অপ্রতুল। প্রফেসর পদে উন্নীত হওয়ার প্রক্রিয়াও কিছু দিন হল থমকে। ল্যাবরেটরিতে যন্ত্রের অভাব। এমনই নানা বিষয়ে বার বার অভিযোগ উঠছে। এ বার এই বিষয়গুলির নিষ্পত্তি-সহ আরও কিছু দাবিতে আন্দোলনে নামছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি কুটা।
আগামী শুক্রবার উপাচার্যের দফতরের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কুটা। নতুন নিয়োগ এবং পদোন্নতির মতো বিষয় দু’টি বহু দিন ধরে আটকে রয়েছে। কুটার সাধারণ সম্পাদক সনাতন চট্টোপাধ্যায় বুধবার জানান, এই দু’টি প্রক্রিয়াকে সক্রিয় করতে প্রয়োজন রাজ্যপালের নমিনি। কিন্তু এখনও নমিনিদের নাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছয়নি। যদিও ইতিমধ্যে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর থেকে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পদে উন্নীত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। কিন্তু প্রফেসর পদে উন্নীত হতে রাজ্যপালের নমিনির মতামতের প্রয়োজন হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অন্তর্বর্তী উপাচার্য রাজ্যপালেরই মনোনীত। তাঁর সঙ্গে রাজভবনের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। তা সত্ত্বেও রাজ্যপালের নমিনি এখনও আসেনি বলে অভিযোগ কুটার। এ দিকে, শিক্ষকের অপ্রতুলতার কারণ দেখিয়ে সম্প্রতি ছাত্র সংগঠন এসএফআই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকল্প ক্লাসের ব্যবস্থা করেছে। যেখানে বিভিন্ন বিষয়ের মেধাবী সিনিয়র ছাত্রেরা জুনিয়রদের পড়া বোঝাচ্ছেন।
এ দিন সনাতন জানালেন, শিক্ষকের অপ্রতুলতা, পদোন্নতি আটকে থাকার পাশাপাশি ল্যাবরেটরিতে যন্ত্রের অভাব রয়েছে। যে ক’টি যন্ত্র রয়েছে, সেগুলি খারাপ হলে সারানোর অর্থ নেই। যন্ত্র চালানো ও তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য শিক্ষাকর্মীর সংখ্যাও অপ্রতুল। বিভাগীয় দফতরগুলি প্রায় জনশূন্য। বিভাগ-প্রতি বাজেট থাকলেও সনাতনের দাবি, তা নেহাত কাগুজে। কারণ, প্রতি ক্ষেত্রেই চরম দীর্ঘসূত্রতা রয়েছে। সেই সঙ্গে পূর্ণ সময়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্য শিক্ষা এবং অর্থ— কেউই নেই। সনাতন বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার ও রাজভবনের জাঁতাকলে পড়ে শিক্ষা আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিকতা সম্পূর্ণ ভাবে স্তব্ধ। তাই বাধ্য হয়ে অবস্থানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে যদি সুরাহা হয়।’’
সনাতন জানান, এই ‘স্মার্ট’ যুগেও পিএইচ ডি সেকশনের তথ্য অথবা অ্যাকাউন্টস সেকশনের তথ্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজিটাইজ় করা হয়নি। স্নাতকোত্তর স্তরে কলেজগুলির হোম সেন্টার পরীক্ষায় নকলের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। এ সব বিষয়ে মোটেও আপস করা যাবে না। এ নিয়ে ফোন ও মেসেজ করেও অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দের সঙ্গে কথা বলা যায়নি।