—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
নিছক প্রতিবাদ নয়! এ যেন সকলের রঙে রং মেশানোর ডাক। সোমবার রাখির বিকেলে রং, রেখার আঁকিবুকিও অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ডাক দিল। অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস চত্বরে তিনটি সুবৃহৎ প্যানেলে আর জি করের নারকীয় কাণ্ডের মর্মবেদনাই ছবিতে ফুটিয়ে তোলেন চিত্রশিল্পীরা।
এই প্রতিবাদ সমাবেশে আসতে পারেননি প্রবীণ চিত্রশিল্পী গণেশ হালুই এবং যোগেন চৌধুরী। কিন্তু তাঁদের লিখিত বিবৃতি পাঠিয়েছেন। হাসপাতালে ডাক্তার-ছাত্রীকে খুন ও ধর্ষণের ঘটনা অকল্পনীয় বলে মন্তব্য করে রাজ্যসভায় তৃণমূল মনোনীত প্রাক্তন সাংসদ যোগেনের বক্তব্য, ‘‘উপযুক্ত সুরক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে হাসপাতালে ডাক্তার, নার্সদের নাইট ডিউটির বন্দোবস্ত অবশ্যই চালু রাখতে হবে। দরকারে এর জন্য সর্বদলীয় সমিতি গঠন করুক রাজ্য। তাতে নার্স, ডাক্তারদেরও রাখা হোক।’’ এই প্রতিবাদের অন্যতম আহ্বায়ক, চিত্রশিল্পী প্রদোষ পাল বলছিলেন, ‘‘মাত্র দেড় দিনের মধ্যে ডাক পেয়ে এত জন আসবেন, ভাবতে পারিনি।’’
একই সময়ে গোলপার্কে জড়ো হন সঙ্গীতশিল্পীরাও। সেখানেও মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলয়ের বিভিন্ন শিল্পীকে দেখা যায়। হাই কোর্টে অনিন্দ্য মিত্র, জয়ন্ত মিত্র, সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো প্রবীণ আইনজীবীরা মিছিলে শামিল হয়েছিলেন। অনিন্দ্য মিত্র, জয়ন্ত মিত্র, সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় একদা রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল ছিলেন। অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন গভর্নমেন্ট প্লিডার।
মিছিলে তরুণ প্রজন্ম এবং মহিলা আইনজীবীদের সংখ্যাও ছিল উল্লেখযোগ্য। তাঁরা সকলেই আর জি কর-কাণ্ডে নিরপেক্ষ তদন্ত এবং ন্যায্য বিচারের দাবিতে খাস হাই কোর্ট চত্বরেই আওয়াজ তোলেন। তবে, মিছিল চলাকালীন এ দিন তৃণমূলের সাংসদ-আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বচসা হয় মিছিলে থাকা এক দল আইনজীবীর। ওই আইনজীবীদের দাবি, কল্যাণ মিছিলকারীদের উদ্দেশে অযাচিত মন্তব্য করেন। যার প্রতিবাদ করেছেন তাঁরা। কল্যাণের দাবি, মিছিলে রাজনৈতিক রং লাগানোর চেষ্টা করছিলেন সিপিএম এবং বিজেপির কয়েক জন আইনজীবী।
এই বিসম্বাদটুকু বাদ দিলে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে সৌহার্দ্যের রাখি বেঁধে একজোট হওয়ার বার্তা দেন প্রতিবাদীরা। প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনীরাও বিশ্ববিদ্যালয়ে জড়ো হন। রাখিবন্ধন করেন। অধ্যাপক সংহতি মঞ্চও শ্যামবাজার মেট্রো স্টেশনের এক নম্বর গেটের কাছে সংহতি সভার
আয়োজন করে।