বালির কাছে হুগলিতে একটি দেহ ভাসতে দেখে খবর দিয়েছিলেন মাঝিরা। কিন্তু এর বেশ কিছু ক্ষণ পরে কলকাতা রিভার ট্র্যাফিক পুলিশ পৌঁছে দেহটি উদ্ধার করে বাজেকদমতলা ঘাটে নিয়ে আসে।
ঘটনাটি বছর কয়েক আগের। বাবুঘাটের কাছে কলকাতা রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের অফিস থেকে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে দেরি হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল মূলত দূরত্ব। দক্ষিণে বজবজ থেকে উত্তরে কোন্নগর পর্যন্ত এই অফিসের আওতাধীন। ৩৩টি ফেরিঘাট ছাড়াও গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স, কলকাতা বন্দর, বজবজ তেল শোধনাগারের মতো গুরত্বপূর্ণ জায়গা রয়েছে রিভার ট্র্যাফিক অফিসের দায়িত্বে। এ ছাড়াও নিবেদিতা সেতু, বিদ্যাসাগর সেতু-সহ একাধিক সেতু ও রেল ব্রিজের নীচের নিরাপত্তার দায়িত্ব ওই জল পুলিশের হাতে। অথচ সাহায্যকারী ফাঁড়ি বা আউটপোস্ট বলতে রয়েছে বজবজে
মাত্র একটি। দক্ষিণে কিছু ঘটলে পরিস্থিতি সামলাতে সেখান থেকে কর্মীরা যেতে পারেন। কিন্তু উত্তরের ক্ষেত্রে বাবুঘাট থেকেই ছোটেন কর্মীরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, সুবিধার জন্য শোভাবাজার এবং কোন্নগরে রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের দু’টি আউটপোস্ট বা ফাঁড়ি করতে কলকাতা পুলিশের বন্দর বিভাগ থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে লালবাজারে। যা বিবেচনাধীন বলে জানিয়েছে পুলিশের একাংশ। এ জন্য প্রাথমিক ভাবে শোভাবাজার সুতানুটিতে জায়গা দেখা হলেও কোন্নগরে কোনও জায়গা ঠিক হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতা রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের আওতায় এখন রয়েছে প্রায় ২২ নটিক্যাল মাইল এলাকা (প্রায় ৪৫ কিলোমিটার)। এই দীর্ঘ এলাকা টহলদারির কাজে জল-পুলিশের ভরসা সাকুল্যে একটি স্পিডবোট এবং দু’টি লঞ্চ। জল-পুলিশের কর্মীরা বজবজ থেকে কোন্নগরে জলপথের ওই এলাকা, দু’টি ভাগ করে লঞ্চ নিয়ে প্রতিদিন পরিদর্শন করেন। রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের হাতে রয়েছে তিনটি জেট-স্কি। প্রতিটি জেট স্কি-তে চালক ছাড়াও আরও দু’জন কর্মী চেপে হুগলি পরিদর্শন করেন।
পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, জেট-স্কি থাকলেও ৪৫ কিমি দীর্ঘ ওই জলপথ ঘনঘন নজরদারি করতে কিছু প্রতিকূলতা থেকেই যায়। তাই উত্তরের নজরদারি কঠোর করতে ফাঁড়ির প্রয়োজন। কারণ বেলুড় বা শোভাবাজারের দিকে নদীতে বড় বিপর্যয় ঘটলে লঞ্চের সাহায্যে দ্রুত পৌঁছনো অসম্ভব।
পুলিশের দাবি, দু’টি আউটপোস্ট হলে সেখানেও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দু’টি দল রাখা যাবে। লালবাজার একাংশ জানিয়েছে, ওই দু’টি আউটপোস্টের প্রস্তাব ছাড়াও দু’টি বড় উদ্ধারকারী বোট কেনার বরাতও দেওয়া হয়েছে।