কালিন্দীতে এই ওয়ার্ড অফিসের জমির মালিকানা নিয়েই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র।
আবাসিকদের দাবি, জমি হাউজ়িং বোর্ডের। পুরপ্রতিনিধির দাবি, জমি পুরসভার। তাই সেই জমিতে ওয়ার্ড অফিস তৈরি করা হবে। সেই দাবি নস্যাৎ করে আবাসিকদের অভিযোগ, মূল নকশা উপেক্ষা করে দক্ষিণ দমদম পুরসভা হাউজ়িং বোর্ডের জমিতে ‘বেআইনি’ ভাবে ওয়ার্ড অফিস নির্মাণ করছে। যা উচ্চ আদালত এবং হাউজ়িং বোর্ডের নির্দেশ বিরোধী। ঘটনাকে ঘিরে জোর বিতর্ক তৈরি হয়েছে দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে। আবাসিকদের সংগঠনটি জানাচ্ছে, সমগ্র ঘটনা জানিয়ে তারা দক্ষিণ দমদম পুরসভা এবং হাউজ়িং বোর্ডে চিঠি দিয়েছে।
দক্ষিণ দমদমের বহু পুরনো এলাকা কালিন্দী। সেখানে হাউজ়িং বোর্ডের জমির উপরে আবাসিক বাড়ি এবং আবাসন গড়ে উঠেছে বহু বছর আগে। সেই কালিন্দীতে দক্ষিণ দমদম পুরসভার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঠিক পাশেই শুরু হয়েছে ওয়ার্ড অফিস নির্মাণ। যা বেআইনি বলেই দাবি করছে বাসিন্দাদের সংগঠন, ‘কালিন্দী প্লট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’। তারা জানাচ্ছে, ২০২২ সালেইহাউজ়িং বোর্ড রায় দিয়ে জানিয়েছে, অতীতে দক্ষিণ দমদম পুরসভা কালিন্দীর মূল নকশা পরিবর্তন করে বিভিন্ন নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে। পরবর্তী কালে আর কোনও নির্মাণের অনুমতি না দিতেও পুরসভাকে নির্দেশ দিয়েছে হাউজ়িং বোর্ড। এমনটাই জানাচ্ছেন প্লট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবী অদিতি চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘কালিন্দীতে প্রোমোটিংয়ের রমরমা শুরু হওয়ায় ২০১২ এবং ২০২১ সাল, দু’বার আমরা উচ্চ আদালতে মামলা করি। উচ্চ আদালত বিষয়টি হাউজ়িং বোর্ডকে দেখতে বলে। ২০২২ সালে হাউজ়িং বোর্ড সাফ জানিয়ে দেয়, দক্ষিণ দমদম পুরসভা মূল নকশা পরিবর্তন করেছে। পরবর্তী কালে তারা যেন কোনও ভাবে কালিন্দী হাউজ়িংয়ের জমিতে কোনও ধরনের নির্মাণের অনুমতি না দেয়।’’
প্লট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন জানাচ্ছে, মূল নকশায় ওই জায়গাটি সবুজ অঞ্চল হিসেবে দেখানো ছিল। সেটি নষ্ট হতে হতে ওই এক ফালি জায়গায় এসে ঠেকেছে। কখনও সেখানে ক্লাব, কখনও স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি জ্যোতিষচন্দ্র সাহার অভিযোগ, ‘‘কালিন্দী অত্যন্ত পরিকল্পিত এলাকা। যেটি বেআইনি নির্মাণে ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখানকার জমিতে নকশার অনুমোদন পুরসভা দিতে পারে না। তা সত্ত্বেও একের পর এক বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে। যার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ, ওই পরিকল্পিত ওয়ার্ড অফিস।’’ বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এর আগে ওই জায়গার উপরে সুফল বাংলার বিক্রেতাদের জন্য ছাউনি এবং তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় তৈরি করা হয়েছিল। এ বার প্রয়োজনে তাঁরা ফের আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন।
যদিও আবাসিকদের দাবি মানতে চাননি স্থানীয় ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি সুচয়িতা দাস। তাঁর পাল্টা দাবি, ওই জমি দক্ষিণ দমদম পুরসভার। তিনি বলেন, ‘‘মানুষের সুবিধার্থে নিয়ম মেনেই ওখানে ওয়ার্ড অফিস তৈরি হবে। এলাকার বাসিন্দারা জানেন, ওটা পুরসভার জমি। আগে ওখানে সুফল বাংলার ছাউনিও তৈরি করেছিল পুরসভা।’’