ক্যাম্পাসে বিক্ষোভের মধ্যে পড়ে অসুস্থ সুরঞ্জন দাসকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ চলছিল। তাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তীব্র উত্তেজনা তো ছড়ালই। মঙ্গলবার ওই বিক্ষোভ চলাকালীন ধস্তাধস্তির মধ্যে পড়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে ছাত্র সংসদের নির্বাচন সম্ভব নয়।
ছাত্র নির্বাচনের দাবিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু দিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছে তিন ছাত্র সংসদ। এই বিষয়ে আলোচনার জন্য কর্তৃপক্ষ এ দিন কর্মসমিতির বৈঠক ডাকেন। বৈঠক শেষে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার গাড়িতে ক্যাম্পাস থেকে বেরোতে গেলে তাঁদের আটকানো হয়। অভিযোগ, কিছু টিএমসিপি-সমর্থকও হাজির হন। তাঁদের বচসা শুরু হয় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে। এক সময় হাতাহাতি বেধে যায়। তারই মধ্যে সুরঞ্জনবাবু গাড়ি থেকে নেমে আবার অরবিন্দ ভবনে ঢুকতে যান। প্রবল ধস্তাধস্তির মধ্যে তিনি কাঁধে ও বুকে চোট পান বলে অভিযোগ।
পাশের বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা এসে পরীক্ষা করে দেখেন, উপাচার্যের রক্তচাপ বেড়ে গিয়েছে। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। সুরঞ্জনবাবুকে স্ট্রেচারে শুইয়ে অরবিন্দ ভবন থেকে বার করে ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। উপাচার্য বলেন, ‘‘আমাকে শারীরিক নিগ্রহ করা হয়েছে। শিক্ষক এবং উপাচার্যের সঙ্গে এ কী আচরণ! যে-কোনও আলোচনারই নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে।’’
আন্দোলনকারীদের পক্ষে সোমাশ্রী চৌধুরী জানান, কর্মসমিতির বৈঠকে তাঁরা স্মারকলিপি দেওয়ার আগেই উপাচার্য ক্যাম্পাসে থেকে বেরিয়ে যেতে চাইছিলেন। তাই তাঁর গাড়ির কাছে কথা বলতে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেখানে টিএমসিপি-সমর্থকেরা তাঁদের আক্রমণ করেন।
ক্যাম্পাসে টিএমসিপি-র নেতা মেবার হোসেন অবশ্য জানান, ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা বসানোর দাবিতে তাঁরা স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলেন। আন্দোলনকারীরাই তাঁদের আক্রমণ করেন। তাঁদের এক সমর্থক গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয় রাজ্য সরকারের নির্দেশে। তাই এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু করার নেই বলে কর্মসমিতিতে মত প্রকাশ করেন সকলেই। শিক্ষামন্ত্রী জানান, শীঘ্রই লোকসভা ভোটের বিজ্ঞপ্তি বেরোবে। ফলে ছাত্রভোটে প্রশাসনিক সাহায্য পাওয়া যাবে না। পড়ুয়ারা ছাত্রভোটের দাবি জানাতেই পারেন। কিন্তু তাঁদের বিষয়টি বোঝাতে হবে।