ফাইল চিত্র।
যাত্রীদের অনেকের আশা ছিল, অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলিকে নিয়ন্ত্রণে জারি হওয়া সরকারি বিধি আগামী ৩ মে-র পরে কার্যকর হলে তাঁদের সমস্যার সুরাহা হবে। তীব্র গরমে কড়কড়ে টাকায় এসি ক্যাবের ভাড়া গুনে বিনা এসিতে সফরের যন্ত্রণা সইতে হবে না। ভাড়া এবং কমিশন নিয়ে অ্যাপ-ক্যাব সংস্থার বিরুদ্ধে অস্বচ্ছতার অভিযোগে চালকদের একরোখা মনোভাব এবং অসহযোগিতার দিন ফুরোবে। কিন্তু, অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে ‘অন ডিমান্ড ট্রান্সপোর্টেশন টেকনোলজিস এগ্রিগেটর্স লাইসেন্স (ওডিটিটিএ) বা সরকারি ছাড়পত্র নেওয়ার মেয়াদ সম্প্রতি রাজ্য সরকার প্রায় এক মাস বাড়িয়ে দেওয়ায় সেই সম্ভাবনায় ইতি পড়েছে। প্রশ্ন উঠছে, সংস্থাগুলির ‘গড়িমসি’র খেসারত আর কত দিন দিতে হবে সাধারণ যাত্রীদের?
গত ৩ মার্চ ক্যাব সংস্থাগুলিকে নিয়ন্ত্রণে বিশেষ নির্দেশিকা জারি করেছিল রাজ্য। তাতে ৬০ দিনের মধ্যে যাবতীয় শর্ত পূরণ করে সংস্থাগুলিকে নতুন করে লাইসেন্স নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে ৩ মে। তার আগেই সম্প্রতি পরিবহণ দফতরের তরফে নতুন নির্দেশিকা জারি করে ওই সময়সীমা ৩১ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। অ্যাপ-ক্যাব পরিষেবা দেওয়ার জন্য সরকারি ছাড়পত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে আবেদন করার খরচ সম্প্রতি অনেকটা বাড়িয়েছে পরিবহণ দফতর। নয়া নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, লাইসেন্স প্রদানের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক হবেন স্টেট ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (এসটিএ) সচিব।
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, শহরের দু’টি প্রধান অ্যাপ-ক্যাব সংস্থার কেউই এখনও ছাড়পত্র নিতে আবেদন জানায়নি। সমস্যার জট কাটাতে গত ৬ এপ্রিল সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন পরিবহণমন্ত্রী। সেখানে ভাড়া পুনর্বিন্যাসের দাবি ছাড়াও সংস্থার কমিশন কেটে নেওয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তার পরে পরিবহণ দফতরের তরফে লাইসেন্স ফি বাড়ানো ছাড়া অন্য কোনও সদর্থক পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ। নয়া সরকারি সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ক্যাবচালকদের একাধিক সংগঠনও। এআইটিইউসি-র ট্যাক্সি এবং অ্যাপ-ক্যাব চালক সংগঠনের নেতা নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘এ ভাবে সময় বাড়িয়ে সমস্যাকে জিইয়ে রাখা হল। যাত্রী এবং চালক, উভয়ের স্বার্থরক্ষার ক্ষেত্রে সরকারের আন্তরিকতা নিয়েই প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিল।’’ ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ড’-এর সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের দাবি সত্ত্বেও সংস্থাগুলি এসি এবং নন-এসি ক্যাবের পৃথক বিকল্প তৈরি করেনি। সেটা হলে সমস্যা কমত।’’ সিটু-র অ্যাপ-ক্যাব চালক সংগঠনের নেতা ইন্দ্রজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘এই নির্দেশে ঘুরপথে ক্যাব সংস্থাগুলিকে স্বস্তি দেওয়া হল।’’
তবে পরিবহণ কর্তাদের দাবি, লাইসেন্স নেওয়ার আবেদনের টাকা বাড়ানোর পরে ক্যাব সংস্থাগুলি এখনও আবেদন করে উঠতে পারেনি। নতুন ভাড়ার ধাপ কী হবে, তা নিয়েও অবস্থান ঠিক করতে পারেনি সরকার। সব দিক ভেবেই লাইসেন্স নেওয়ার সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।