বিপজ্জনক: বর্ষার মরসুমে বাতিস্তম্ভের এমন খোলা তার নিয়ে তৈরি হয়েছে আশঙ্কা। নিজস্ব চিত্র
ঝড়-বৃষ্টির সন্ধ্যায় রাজভবন সংলগ্ন ফুটপাতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর পরে কেটে গিয়েছে এক মাস। সেই ঘটনায় শহরের ওই ভিভিআইপি এলাকায় বিদ্যুৎ দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তার পরেই রাজভবন চত্বরে বাতিস্তম্ভের খোলা তার ঢেকে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে পুরসভা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ভিভিআইপি এলাকা বলেই কি বাতিস্তম্ভের খোলা তার ঢাকার এই তৎপরতা? শহরের বাকি অংশের খোলা তারের কী ব্যবস্থা হবে? যদিও পুরসভার তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে, শীঘ্রই অন্যত্রও খোলা তার ঢেকে দেওয়ার কাজ শুরু হবে।
গত মাসে রাজভবনের নর্থ গেটের সামনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তরুণ ইঞ্জিনিয়ার ঋষভ মণ্ডলের। সেই ঘটনার পরেই তদন্ত শুরু করে বিদ্যুৎ দফতর। পাশাপাশি,
পুরসভার তরফেও ওই এলাকায় বাতিস্তম্ভের খোলা তার ঢেকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও এর আগে ২০১৫ সালে তৎকালীন মেয়র শহরকে খোলা তার থেকে মুক্ত করতে বৈঠক করেছিলেন। কিন্তু তার পরেও অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। শহরের উত্তর ও দক্ষিণের একাধিক জায়গায় এখনও বিপজ্জনক ভাবে বাতিস্তম্ভ থেকে ঝুলছে খোলা তার। কোথাও আবার বাতিস্তম্ভ থেকে বাইরে বেরিয়ে রয়েছে বিদ্যুতের তার। বেশির ভাগ জায়গায় বাতিস্তম্ভের এই খোলা অংশটি মাটির কাছাকাছি হওয়ায় জমা জলে বিপদের ঝুঁকি আরও বেশি থাকে। বাগবাজারের বাসিন্দা নিরুপম হালদার বলেন, ‘‘বাতিস্তম্ভের খোলা তারগুলি এতটাই নিচুতে থাকে যে, বাচ্চারাও সহজে নাগাল পাবে। এ ছাড়া, মাঝেমধ্যে বাতিস্তম্ভ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে কর্মীরা আসেন, তাঁরাও এগুলি ঠিক ভাবে বন্ধ না করে চলে যান। রাজভবন চত্বরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর মতো ঘটনা যে কোনও দিন শহরের যে কোনও জায়গায় ঘটতে পারে।’’
সপ্তাহখানেকের মধ্যেই যেখানে বর্ষা শুরু হওয়ার কথা, সেখানে শহরের বাকি এলাকার জন্য এই উদ্যোগ নেই কেন, সেই প্রশ্ন উঠছে। রাজডাঙার দেবলীনা সেনের কথায়, ‘‘ভিভিআইপি এলাকায় দুর্ঘটনার পরেই এত তৎপরতা। শহরের অন্য এলাকায় হলে কি এই তৎপরতা থাকত?’’ এ বিষয়ে সিইএসসি-র বক্তব্য, বাতিস্তম্ভ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তাদের নয়। এ ছাড়া, উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতায় সিইএসসি-র বিদ্যুতের তার মাটির তলা দিয়ে গিয়েছে। এমনকি, রাজভবনের যে অংশে দুর্ঘটনা ঘটেছিল, সেখানেও বিদ্যুতের তার মাটির নীচেই রয়েছে বলে জানিয়েছে ওই সংস্থা।
যদিও পুরসভা সূত্রের খবর, শহর জুড়েই খোলা তার ঢেকে দেওয়া হবে। আর বাতিস্তম্ভের খোলা অংশটি মাটি থেকে সাড়ে তিন ফুট উপরে তুলে দেওয়া হবে, যে কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। পুরসভার আলো বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক আধিকারিক বলেন, ‘‘রাজভবনের সামনে কাজ শুরু হয়েছে। শহরের যে সব এলাকায় বৃষ্টিতে জল জমে, সেই সব জায়গায় আগে বাতিস্তম্ভের খোলা অংশটি বন্ধ করে দিয়ে মাটি থেকে একটু উপরে তুলে দেওয়া হচ্ছে। শহরের বাকি অংশেও এই কাজ শুরু হবে।’’