বাইপাসে গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো রুটের তিনটি স্তম্ভ তৈরি করে রাস্তার দু’পাশের মেট্রোর লাইনকে জুড়ে দেওয়া হবে। ফাইল ছবি।
মেট্রোপলিটন মোড়ে মেট্রোর স্তম্ভ তৈরির কাজ পুরোদমে শুরু হলে ই এম বাইপাসের যান চলাচল সামলানো যাবে তো? যানজটে থমকে যাবে না তো বাইপাস? আপাতত এই প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের অন্দরে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এলাকায় বার কয়েক মহড়া দিয়ে সমস্যা খতিয়ে দেখে নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও চিন্তা যাচ্ছে না লালবাজার থেকে শুরু করে ট্র্যাফিকের নিচুতলার কর্মীদের একাংশের।
পুলিশ সূত্রের খবর, শুক্রবারই মেট্রো কর্তৃপক্ষকে ই এম বাইপাসে মেট্রোপলিটন মোড়ের অংশে কাজ শুরুর জন্য গোটা এলাকা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সেই মতো শুরু হয়েছে এলাকা ঘেরার কাজ। জানা গিয়েছে, বাইপাসের এই অংশে গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো রুটের তিনটি স্তম্ভ তৈরি করে রাস্তার দু’পাশের মেট্রোর লাইনকে জুড়ে দেওয়া হবে। যদিও বাইপাসের এই অংশে মেট্রোর কাজের আগে থেকেই জট তৈরি হয়। কাজ শুরু হলে বাইপাসে যান চলাচলে কী কী সমস্যা হতে পারে, তা চিহ্নিত করে জানায় পুলিশ। বার কয়েক বৈঠকের পাশাপাশি পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুরু হয় বিকল্প পথ খোঁজার তোড়জোড়। মেট্রোপলিটন সংলগ্ন অংশে বিকল্প দু’টি রাস্তাও তৈরি করা হয়। যদিও তার পরেও ব্যস্ত সময়ে এই অংশে গাড়ির চাপ সামলানো যাবে কি না, তা নিয়ে চিন্তা থাকছেই।
এমনিতেই শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ই এম বাইপাস। প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে কয়েক লক্ষ গাড়ি যাতায়াত করে বলে ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর। বিমানবন্দরের পাশাপাশি সল্টলেক সেক্টর ফাইভের কর্মীদের একটা বড় অংশ প্রতিদিন এই পথ ব্যবহার করেন। অনেকে আবার অফিস থেকে ফেরার পথে চিংড়িঘাটা হয়ে বাইপাস ধরেন। ফলে এই রাস্তায় মেট্রোপলিটন মোড়ের একাংশ আটকে মেট্রোর কাজ শুরু হলে যান চলাচলে কতটা প্রভাব পড়বে, তা নিয়েই চিন্তিত পুলিশের একাংশ। পরিস্থিতি বিবেচনা করেইতিমধ্যে কাজ শুরু হলে কী ভাবে ট্র্যাফিক মোকাবিলা করা হবে, তা ঠিক করতে মহড়াও দেওয়া হয়েছে। বেলেঘাটা ট্র্যাফিক গার্ড সূত্রের খবর, গত সপ্তাহের শুক্রবার থেকে শুরু করে এই সপ্তাহের মঙ্গলবার পর্যন্ত মহড়া চলে। কখন গাড়ির চাপ কেমন থাকে, কী সমস্যা হচ্ছে, খতিয়ে দেখা হয়। গাড়ির চাপ বাড়লে তা কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে, দেখে নেওয়া হয় তা-ও।
ট্র্যাফিক গার্ডের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বাস্তব পরিস্থিতি দেখতেই মহড়া দেওয়া হয়। ছোটখাটো কিছু সমস্যা আমরা পেয়েছি। সেই মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’’ ট্র্যাফিক গার্ডের আধিকারিকদের একাংশ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও নিচুতলার কর্মীদের একাংশ যানজটের কারণে ভোগান্তি বাড়ার আশঙ্কা করছেন। বাইপাসে কর্মরত এক ট্র্যাফিক সার্জেন্ট বলেন, ‘‘দিনের ব্যস্ত সময়ে এমনিতেই চাপ থাকে। গাড়ির গতিও বেশি থাকে এই রাস্তায়। তার উপরে এই রাস্তা বিমানবন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ায় ভিআইপি-দের যাতায়াতও লেগেই থাকে। মেট্রোর কাজ পুরোদমে শুরু না হলে পরিস্থিতি কতটা সামলানো যাবে, তা বোঝা যাচ্ছে না।’’ লালবাজারের এক ট্র্যাফিক কর্তা অবশ্য বললেন, ‘‘সমস্যা যাতে না হয়, তার জন্য যা যা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সবটাই করা হয়েছে। গার্ডকেও সেই মতো নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই অংশে মেট্রোর কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অতিরিক্ত পুলিশও এই এলাকায় মোতায়েন থাকবে।’’