অনুষ্ঠানের একটি দৃশ্য
শহর জুড়ে রংয়ের মেলা। লাল-হলুদ-নীল-সবুজের ভিড়ে কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছে লকডাউনের নিকষ কালো দিনগুলো। সব ভেদাভেদ ভুলে রংয়ের খেলা মেতে উঠেছে শহর, মফঃস্বল থেকে গ্রাম-বাংলা। সেই রংয়ের মেলাকে আরও রঙিন করে তুলতে ২৭ মার্চ আনন্দবাজার এবং এফআইসিসিআই ওয়াইফ্লোরকে সঙ্গে নিয়ে এক সাংস্কৃতিক সন্ধার আয়োজন করেছিল প্রভা খৈতান ফাউন্ডেশন। কবিতা পাঠ, গান, নাচ, আরও কত কী! সব মিলিয়ে তারকার মেলা বসেছিল আইটিসি সোনার বাংলার সুন্দরবন লনে। উৎসবমুখর তো বটেই, রং আর সুরের মিশেলে যেন এক অদ্ভুত সুন্দর পরিবেশের সাক্ষী রইল বাংলা তথা গোটা বিশ্ব।
খোল দ্বার খোল,
লাগল যে দোল...
সাংস্কৃতিক সন্ধার আদ্যান্ত জুড়ে ছিল বসন্তের একরাশ উচ্ছ্বাস। সেই উচ্ছ্বাসকে আরও একটু বাড়িয়ে দিয়েছিলেন এহসাস উইমেন লন্ডনের সঙ্গীতা দত্ত এবং এহসাস উইমেন কলকাতার এষা দত্ত। অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন তাঁরা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই কবি শ্রীজাতর গলায় উঠে এল রবি ঠাকুরের রচনাবলী। কবির কন্ঠ যেন মন্ত্রমুগ্ধ করে দিয়েছিল গোটা লনকে। এর পরেই ছিল পারফর্মিং আর্ট - ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের পরিচালনায় 'দীক্ষা মঞ্জরি' উপহার দিল এক অসাধারণ নৃত্যনাট্য — বিষয় রাধা-কৃষ্ণ লীলা। কী দারুন অভিনয়! স্নিগ্ধ আলোয় গোটা সুন্দরবন লনের মন কেমন করে তুলেছিল কৃষ্ণের বাঁশির আওয়াজ। এমন কঠিন সময়ে দাঁড়িয়ে এহেন দৃশ্যের জুড়ি মেলা ভার।
রাধা-কৃষ্ণ লীলার একটি দৃশ্য
গানের সুরে অনুষ্ঠানটিকে আরও একটু সুরেলা করে তুলতে সঙ্গীত উপস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন বৈঠক ইউকে। সঙ্গতে নাচ তো ছিলই। নূপূরের ঝঙ্কারে মঞ্চ মাতিয়ে তুলেছিল প্রীতি পটেলের নেতৃত্বে মনপুরি ডান্স ট্রুপ, নাদাম ডান্স ট্রুপ, এবং তনুশ্রী শংকরের ডান্স ট্রুপ। শুধু নাচই নয়, সন্দীপ ভুতোরিয়ার পাঠ করা একটি বিশেষ কবিতাও মন মাতিয়ে তুলেছিল দর্শকদের।
দোলের উৎসব আর খাওয়া-দাওয়া হবে না, তাই কখনও হয়? মন মাতানো অনুষ্ঠানের পাশাপাশি মেনুতে ছিল জিভে জল আনা স্ন্যাকস - ঠান্ডাই, গুজিয়া, কচুরি, জিলিপি, আরও কত কী! অর্থাৎ আনন্দের সঙ্গে সঙ্গে পেটপুজোও চলল সমান তালে।
এই অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে ফাউন্ডেশনের এক্সিকিউটিভ ট্রাস্টি অনিন্দিতা চট্টোপাধ্যায়, দীর্ঘ দেড় বছর পরে সফলভাবে এই ধরনের অনুষ্ঠান করতে পেরে আমি আল্পুত। পাশাপাশি অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকা প্রত্যেক শিল্পীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন তিনি।
বলা যায়, দীর্ঘ এক বছর ঘরবন্দি থাকার পরে এই অনুষ্ঠান সত্যিই জীবনকে আরও একটু রঙে ভরিয়ে দিল। উৎসবের মরসুমে এমন একটা সন্ধার জন্যই অপেক্ষা করেছিল সবাই। এবং বেশ ভালভাবেই তা সম্পন্ন হল। অবশ্যই সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে।
অনুষ্ঠানটি দেখুন -
প্রভা খৈতান কলকাতার একটি এনজিও। গোটা দেশে তারা লেখক এবং শিল্পীদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।