কৈলাস বিজয়বর্গীয়র বিরুদ্ধে পোস্টার নিজস্ব চিত্র
বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকেই বিজেপি-র অন্দরের ফাটল ক্রমশই চওড়া হচ্ছে। এবার রাজ্য বিজেপি-র পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ল শহরে। পোস্টারে কৈলাসকে ‘টিএমসি সেটিং মাস্টার’, ‘গো ব্যাক’ বলে কটাক্ষ করা হয়েছে। পোস্টারে আবার মুকুল রায়ের সঙ্গে কৈলাসের ছবিও রয়েছে। মুরলীধর সেন লেনের সদর দফতরের বাইরে, হেস্টিংসে কার্যালয়ের বাইরে ও বিমানবন্দরের কাছে এই পোস্টার পড়েছে। এই পোস্টার থেকে এটা আরও স্পষ্ট যে কৈলাসের প্রতি দলের অন্দরেই ক্ষোভ মারাত্মক আকার নিয়েছে। অনেকেই তাঁর অপসারণের দাবি তুলেছেন।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে রাজ্য বিজেপি-র পদাধিকারীদের বৈঠক ছিল। সেখানেও হাজির ছিলেন না কৈলাস। ভোটের ফল ঘোষণার পর কৈলাস নিজের রাজ্য মধ্যপ্রদেশে ফিরে যান, সেই থেকে পশ্চিমবঙ্গে আসেননি। কৈলাস না এলেও অমিত মালব্য ও অরবিন্দ মেননরা কলকাতায় এসেছিলেন। এসেছিলেন বিজেপি-র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশ। তাঁদের নিয়ে হেস্টিংস অফিসে বিজেপি-র কোর কমিটির বৈঠক হয়।
বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর রাজ্য বিজেপি-র একাংশ কৈলাসের দিকেই আঙুল তোলে। এখন রাজ্য বিজেপিতে যখন ভাঙন দেখা দিয়েছে, তখনও কৈলাসের দিকেই আঙুল উঠেছে। কারণ, কৈলাসের নেতৃত্বেই তৃণমূল ছেড়ে অনেকে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন। যাঁদের কেউ কেউ এখন আবার সুর বদলে তৃণমূল ফিরতে চাইছেন।
এমনিতেই বিজেপি-র ‘আদি’ নেতাদের সঙ্গে কৈলাসের বনিবনা প্রথম থেকেই ছিল না। বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র বিপর্যয় হওয়ার পর থেকেই নেটমাধ্যমে দিলীপ ঘোষের প্রতি উষ্মা প্রকাশ করতে শুরু করেন উত্তর-পূর্বের তিন রাজ্যের রাজ্যপালের দায়িত্ব পালন করে আসা তথাগত রায়। শুধু দিলীপ নন, তথাগতর নিশানায় ছিলেন তিন কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস, শিবপ্রকাশ এবং অরবিন্দ মেনন। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, তথাগতর রাগ কৈলাসের উপরেই বেশি। সেটা প্রকাশ পেয়েছে। রাজ্য বিজেপি-র অনেকেই মনে করেন তৃণমূলের সঙ্গে ‘গোপন বোঝাপড়া’ ছিল মুকুল ও কৈলাসের। সেই কারণে নির্বাচনে দলের ভরাডুবি হয়েছে। সিদ্ধার্থনাথ সিংহ পর্যবেক্ষক থাকাকালীন মুকুলকে দলে নিতে চাননি। কৈলাস পর্যবেক্ষক হয়ে আসার পরই মুকুলক নিয়ে আসেন, তাঁকে গুরুত্বও দিতে শুরু করেন। এছাড়াও দলের অন্দরে কান পাতলে শোনা যেত দিলীপ-কৈলাস বিবাদের কথাও।
তবে পোস্টারের বিষয়ে রাজ্য বিজেপির কোনও শীর্ষ নেতা কিছু বলতে চাননি। দলের একাংশের বক্তব্য, এই ধরনের পোস্টার মারা তাদের দলের সংস্কৃতি নয়।