প্রতীকী ছবি।
ডিসেম্বরের বৃষ্টি যতই ঘ্যানঘ্যানে হোক না কেন, বায়ুদূষণের হাত থেকে রেহাই দিয়েছিল মহানগরীকে। পরিবেশ দফতর সূত্রের খবর, গত দিন দুয়েকের বৃষ্টিতে সাময়িক ভাবে কলকাতার বাতাসে দূষণের মাত্রা কমেছিল। সোমবার থেকে বৃষ্টি থামতেই ফের বাতাসে দূষণের মাত্রা চড়তে শুরু করেছে। আবহাওয়া শুকনো হওয়ায় আগামী ক’দিনের মধ্যেই ফের দূষণের মাত্রা তুঙ্গে উঠবে বলেই আশঙ্কা করছেন পরিবেশকর্মীরা।
সম্প্রতি মার্কিন দূতাবাসের সমীক্ষায় ধরা পড়ে, বায়ুদূষণে দিল্লি, মুম্বইকে হারিয়ে দিয়েছে কলকাতা। কিন্তু বঙ্গোপাসাগরে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপের জেরে কলকাতায় বৃষ্টি হওয়ায় বাতাসের ভাসমান ধূলিকণা অনেকটা কমে গিয়েছিল। পরিবেশবিদেরা বলছেন, শীতকালে মধ্যরাতে এবং ভোরের দিকে কলকাতায় বায়ুদূষণের মাত্রা অস্বাভাবিক বেশি থাকে। দূষণের সূচক ৩০০ পেরিয়ে যায়। কিন্তু মার্কিন দূতাবাসের ওয়েবসাইট বলছে, রবিবার মধ্যরাতে এবং সোমবার ভোরে বায়ুদূষণের সূচক ১১৫ থেকে ১৩০-এর মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে।
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের যন্ত্রও বলছে, দক্ষিণ শহরতলিতে মধ্যরাতে এবং ভোরে বায়ুদূষণের মাত্রা স্বাভাবিক সহনশীলতার ধারেকাছেই ছিল। পর্ষদের এক শীর্ষ কর্তা বলছেন, শীতে আবহাওয়া শুকনো হওয়ায় অতিরিক্ত ধুলো বাতাসকে দূষিত করে তোলে। বৃষ্টি না হলে অন্যান্য দূষিত কণাও বাতাসে মেশে। বর্ষায় বৃষ্টির ফোঁটার সঙ্গে মিশে ধূলো ও দূষিত কণা মাটিতে নেমে আসে। তাই দূষণের মাত্রা কমে যায়। রাজ্য পরিবেশ দফতরের একাধিক কর্তা ঘনিষ্ঠ মহলে প্রায়ই বলেন, বঙ্গোপসাগরের কাছে হওয়ায় কয়েক মাস দূষণের মাত্রা কমে। না হলে কলকাতার পরিস্থিতি দিল্লির মতোই ভয়াবহ হতে পারত।’’
পরিবেশকর্মীদের অনেকে বলছেন, এই বৃষ্টির উপরে ভরসা করে থাকলে দূষণে পাকাপাকি রাশ টানা যাবে না। নিম্নচাপের জেরে ডিসেম্বরে সাময়িক স্বস্তি হয়তো মিলবে। কিন্তু ক’দিন পর থেকেই তো ফের মাথাচাড়া দেবে দূষণ। সে কথা যে মিথ্যে নয়, তার ইঙ্গিত মিলেছে মার্কিন দূতাবাসের তথ্যেও। ভোরে কম থাকলেও এ দিন সন্ধ্যা সাতটায় কলকাতার বায়ুদূষণের সূচক উঠে গিয়েছে ১৬৪-তে। যার অর্থ কলকাতার বায়ু অস্বাস্থ্যকর। তা হলে উপায় কী?
সদুত্তর নেই পর্ষদ-কর্তাদের কাছে। এক কর্তার দাবি, দূষণে রাশ টানতে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে নিয়মিত নির্দেশিকা পাঠানো হয়। দূরদর্শী সমাধানের জন্য জাতীয় পরিবেশ প্রযুক্তি গবেষণা সংস্থা (নিরি)-র সঙ্গে যৌথ ভাবে সমীক্ষা চলছে। ওই সমীক্ষায় কোন উৎস থেকে কতটা দূষণ হচ্ছে, তা চিহ্নিত করে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ করা সম্ভব হবে।