স্তূপীকৃত: বাবুঘাট সংলগ্ন এলাকায় এখনও পড়ে রয়েছে গঙ্গাসাগর পুণ্যার্থীদের শিবিরের আবর্জনা। মঙ্গলবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী
এলাকায় ইতিউতি ছড়িয়ে প্লাস্টিক, থার্মোকলের থালা। কোথাও আবার ডাঁই করে রাখা আবর্জনা। পুণ্যার্থীদের জন্য ইটের তৈরি উনুন, শৌচালয়, পুজোর বেদি এখনও রয়ে গিয়েছে একই ভাবে। পড়ে রয়েছে রান্নার জন্য ব্যবহৃত কাটা গাছের গুঁড়িও। ক্রেন দিয়ে অস্থায়ী শিবির ও শৌচালয় গুঁড়িয়ে দেওয়ার কাজ চলছে। কিন্তু এখনও চত্বরে ছড়িয়ে রয়েছে মলমূত্র। জল পড়ে কর্দমাক্ত হয়ে গিয়েছে মাঠের ওই অংশ। গঙ্গাসাগর পুণ্যার্থীদের জন্য তৈরি শিবির চার দিন আগে শেষ হয়ে গেলেও বাবুঘাট এবং সংলগ্ন বঙ্গবাসী মাঠের অবস্থা এখনও এমনই রয়ে গিয়েছে। গত শুক্রবার এই শিবির শেষ হলেও কবে ময়দানের ওই অংশ পরিষ্কার হবে, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তবে পুরসভার দাবি, ওই এলাকা পুরোপুরি ভাবে আবর্জনামুক্ত করতে আরও পাঁচ দিন লাগবে।
এত সময় কেন লাগবে, সেই প্রশ্ন তুলছেন পরিবেশকর্মীদের একাংশ। শহরের জঞ্জাল পরিষ্কার করতেই যেখানে নাজেহাল হতে হয় পুর কর্তৃপক্ষকে, সেখানে গঙ্গাসাগর শিবিরের আয়োজন করে বাড়তি আবর্জনা অপসারণের দায় কেন নেবে কলকাতা পুরসভা, সেই প্রশ্নও করছেন কেউ কেউ। তবে এই বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি নন পুর কর্তৃপক্ষ। পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ দফতরের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বলছেন, ‘‘শিবিরের আয়োজন নিয়ে কিছু মন্তব্য করতে পারব না। তবে শিবির শেষ হওয়ার পরেই পুরসভা এলাকা পরিষ্কারের কাজ শুরু করছে। তবে এখনও কিছুটা কাজ বাকি রয়েছে।’’
আবর্জনা অপসারণে দেরি হচ্ছে কেন? দেবব্রতবাবু জানাচ্ছেন, কোনও খোলা চত্বর থেকে জঞ্জাল দ্রুত অপসারণ করা সম্ভব হয়। কিন্তু কোনও শিবির অথবা অস্থায়ী নির্মাণ ভেঙে এলাকা পরিষ্কারের কাজ করতে অনেকটা বেশি সময় লাগে। তাই প্রতি বছর গঙ্গাসাগরের শিবির শেষ হয়ে যাওয়ার পরে পুরো বাবুঘাট ও সংলগ্ন এলাকা পরিষ্কার করতে আরও সপ্তাহখানেক সময় লেগে যায়।
এ নিয়ে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের মন্তব্য, ‘‘পুর নাগরিকদের করের টাকায় শহরের মধ্যে এই ধরনের শিবির তৈরি এবং তা পরিষ্কার করা অর্থহীন। এই কারণেই শহরের মধ্যে এমন শিবির করা সমর্থন করা যায় না। দ্রুত বর্জ্য অপসারণ না করতে পারলে আদালতের নির্দেশে পুরসভাকে জরিমানা পর্যন্ত ধার্য করা যেতে পারে।’’ পুর কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, শহর জঞ্জালমুক্ত করতে তাঁদের কাছে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো রয়েছে।