ফেসবুকে অর্জুনের পোস্ট ঘিরে জল্পনা। ফাইল চিত্র।
গত কয়েকদিন ধরে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং ‘বেসুরো’। তাঁর একাধিক মন্তব্যে দলবিরোধিতার আঁচ পাচ্ছেন রাজনীতির কারবারিরা। এই প্রেক্ষিতে বুধবার অর্জুনের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে শুরু হল নয়া জল্পনা। হিন্দিতে লেখা সেই পোস্টের বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, ‘সমুদ্রের নিজস্ব শক্তি থাকে। কিন্তু, মাঝিও কি ক্লান্ত হয়?’
আপাত ভাবে সহজ ও সরল এই ফেসবুক পোস্ট নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। সাগর ও মাঝির উপমা দিয়ে ‘বিদ্রোহী’ অর্জুন কি তাঁর বর্তমান দল এবং নিজের তুলনা করলেন? উঠছে সেই প্রশ্ন। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য, অর্জুন আচমকাই ইউরোপে চলে গিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
কখনও পাটশিল্প নিয়ে কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রীর সঙ্গে স্নায়ুযুদ্ধ, তো কখনও দলের সংগঠন নিয়ে প্রকাশ্যেই প্রশ্ন তোলা— কয়েক দিন ধরেই অর্জুনকে ‘বিদ্রোহী’ এবং খানিকটা ‘রণং দেহি’ মেজাজে দেখা গিয়েছে। আবার, তাঁর কণ্ঠে অভিমানও প্রকাশ পেয়েছে। তাঁর আক্ষেপ, তিনি একাধারে দলের সাংসদ, অন্য দিকে দলের রাজ্য সহ-সভাপতি। কিন্তু তাঁকে কাজে লাগানো হচ্ছে না। আশঙ্কা প্রকাশ করে এ-ও বলেছেন, ‘‘কাল যদি পদে না রাখে তো থাকব না।’’
তাঁর এই ‘বেসুর’ থেকে অর্জুনকে নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। ব্যারাকপুরের সাংসদের কি তা হলে ‘ঘর ওয়াপসি’ হতে চলেছে? গুঞ্জন শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরেও। বিধানসভা ভোটের পরে বিজেপি থেকে অনেকেই তৃণমূলের ঘরে ফিরে এসেছেন। শাসক শিবিরের নেতারা ঢোঁক গিলে তাঁদের মেনেও নিয়েছেন। সেই একই পথেই কি ‘প্রত্যাবর্তন’ হবে ডাকাবুকো নেতা অর্জুনেরও! তৃণমূলের একাংশে এখন এমনই জল্পনা। দলের অনেকে যেমন বলছেন, অর্জুন ফিরে এলে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে শক্তি বাড়বে দলের, তেমনই অন্য একাংশের বক্তব্য, গত বিধানসভা ভোটে ব্যারাকপুরে লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভার মধ্যে ছ’টিতেই জিতেছিল তৃণমূল। অর্জুনকে ছাড়াই। সেটাও খেয়াল রাখা উচিত।
২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া অর্জুন তিন বছর পর খেদ প্রকাশ করে বলেছেন, তাঁকে এখনও কেউ কেউ ‘বহিরাগত’ ভাবে। কিন্তু তিনি মনপ্রাণ দিয়ে বিজেপিকে বাংলার মাটিতে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছেন। এ সবের মধ্যে অর্জুনের এই ফেসবুক পোস্টে তাই ‘অন্য ইঙ্গিত’ দেখছে রাজনৈতিক মহল।