ভিড়াক্কার: করোনা সংক্রান্ত আশঙ্কা অগ্রাহ্য করে কেনাকাটার ভিড়। বুধবার, নিউ মার্কেটে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
বর্ষবরণের রাতে জনজোয়ার ঠেকাতে মানুষের ‘সুবুদ্ধি’র উপরেই ভরসা রাখছে কলকাতা পুলিশ। পাশাপাশি লালবাজার এ-ও জানাচ্ছে, ভিড় নিয়ন্ত্রণে আদালত মঙ্গলবার যে কয়েকটি নির্দেশিকার কথা বলেছে, সেগুলি মানা হবে। পুলিশ প্রশাসনের মত, বর্ষবরণে যোগ দিন জনগণ, তবে সংযত ভাবে।
পার্ক স্ট্রিট বা ভিক্টোরিয়ার মতো শহরের যে সব জায়গায় ভিড় হয়, সেখানে জমায়েত নিয়ন্ত্রণ করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানাচ্ছে লালবাজার। যার মধ্যে রয়েছে, মাস্ক এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার বিলি। এ ছাড়াও পুলিশের তরফে মাইকে প্রচার করা হবে, যাতে উৎসাহী মানুষ এক জায়গায় ভিড় না করেন।
যা শুনে কলকাতা পুলিশের একাধিক অফিসারের বক্তব্য, অর্থাৎ, মানুষ যদি সংযত হন, তা হলেই ভিড় কম হবে। তা না হলে ফের বড়দিনের রাত ফিরে আসবে পার্ক স্ট্রিটে।
বড়দিনের রাতের ওই ভিড় ফিরে এলে কী হতে পারে পরিস্থিতি, ভাবতে পারছেন না চিকিৎসক মহল। কারণ, ইতিমধ্যেই কলকাতায় খোঁজ মিলেছে করোনার নতুন স্ট্রেনের। যার সংক্রমণ ক্ষমতা নিয়েও উঠে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন তথ্য। তাই পরিস্থিতির লাগাম টানা আবশ্যিক বলেই মত বেশির ভাগের।
আরও পড়ুন: ফের বাড়ল আয়কর রিটার্নের সময়, ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত, জানাল অর্থ মন্ত্রক
লালবাজার সূত্রের খবর, বর্ষবরণের নিরাপত্তার কথা ভেবে সেখানে ১৫টি পুলিশ সহায়তা শিবির বানানো হয়েছিল। যেগুলি সহায়তা কেন্দ্রের কাজ করবে। এ ছাড়া ট্র্যাফিক পুলিশের যে সব কিয়স্ক পার্ক স্ট্রিট বা তার আশপাশে রয়েছে সেগুলিকেও সহায়তা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
সৌম্যেন্দুর অপরাধ কী? ‘ন্যায়বিচার’ চেয়ে মমতাকে চিঠি মধ্যম অধিকারীর
আদালতের কথা মতো ওই সব কিয়স্ক চেকপোস্টের কাজ করবে। অর্থাৎ, কেউ মাস্ক পরে না এলে তাঁকে সেখান থেকেই তা দেওয়া হবে। স্যানিটাইজ়ার রাখারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে লালবাজার। যা মানুষের মধ্যে বিলি করা হবে। মাস্ক পরা এবং করোনা-বিধি মেনে চলার ঘোষণা এখন থেকেই করা হবে।
বড়দিনের রাতে জনজোয়ারে ভেসেছিল পার্ক স্ট্রিট। কার্যত উধাও হয়ে গিয়েছিল করোনার যাবতীয় বিধি-নিষেধ। সামাজিক দূরত্বের বালাই ছিল না গোটা পার্ক স্ট্রিট চত্বরে। এর পরেই এক জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়।
লালবাজারের এক কর্তা জানান, বড়দিনে গোটা পার্ক স্ট্রিট সংলগ্ন এলাকায় এক হাজারের বেশি পুলিশ কর্মীকে মোতায়েন করা হয়েছিল। ওই দিনের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্ষবরণের প্রাক্কালে আরও বেশি সংখ্যক পুলিশকর্মীকে পার্ক স্ট্রিটে মোতায়েন করা হচ্ছে।
লালবাজার জানিয়েছে, পার্ক স্ট্রিটের মোড় থেকে মল্লিকবাজার মোড় পর্যন্ত অংশকে পাঁচটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ভিড় সামলানোর জন্য থাকছেন ডিসি পদমর্যাদার পাঁচ জন অফিসার, যাঁরা এক একটি ভাগের দায়িত্ব সামলাবেন। পার্ক স্ট্রিট ও সংলগ্ন এলাকার ভিড়ের উপরে নজরদারি চালানোর জন্য থাকছে একটি অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম। ওই এলাকায় নজরদারি চালানোর জন্য ১১টি ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করা হয়েছে।
এ বার এই প্রস্তুতি কতটা ভিড় নিয়ন্ত্রণে কাজে আসে, সেটাই দেখার অপেক্ষা।