যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল। —ফাইল চিত্র ।
৩০২ ধারায় খুন এবং ৩৪ ধারায় সম্মিলিত অপরাধের অভিযোগে আগেই মামলা রুজু করা হয়েছিল। এ বার যাদবপুরের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ‘র্যাগিং ইন এডুকেশনাল ইনস্টিটিউশন অ্যাক্ট, ২০০০’ অর্থাৎ, অ্যান্টি র্যাগিং বা র্যাগিং বিরোধী আইনের ধারাতেও মামলা রুজু করার আবেদন করা হবে আদালতে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে এমনটাই। মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যু সংক্রান্ত মামলার শুনানি রয়েছে। আদালতে হাজির করানো হবে যাদবপুরকাণ্ডে ধৃত দীপশেখর দত্ত, মনোতোষ ঘোষ এবং সৌরভ চৌধুরীকে। শুনানির সময়ই ধৃতদের বিরুদ্ধে র্যাগিং বিরোধী আইনে মামলা করার আবেদন করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
যাদবপুরের ছাত্রমৃত্যুতে প্রথম থেকেই র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ সম্প্রতি হস্টেল থেকে একটি নীল রঙের হাফপ্যান্ট এবং গেঞ্জি উদ্ধার করেছে। এক পড়ুয়ার দাবি, ওই পোশাক মৃত ছাত্রের। ৯ অগস্ট ওই ছাত্রকে বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল বলেও অনেকে দাবি করেছেন। যার জেরে গোটা ঘটনায় র্যাগিং-যোগ আরও জোরালো হয়েছিল। মামলার শুনানি চলাকালীন সরকারি কৌঁসুলি সৌরীন ঘোষালও দাবি করেছিলেন, ‘‘একটা অত্যাচারের গল্প পাচ্ছি।’’ পুলিশ সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছে যে, অভিযুক্তেরা নিজেদের ‘বাঁচানোর চেষ্টা’ করছেন। তাঁদের বয়ানে অসঙ্গতিও দেখা গিয়েছে। এক এক জন এক এক রকম বয়ান দিচ্ছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
গত ৯ অগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ-২ ব্লকের তিন তলার বারান্দা থেকে পড়ে যান বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়া। ১০ অগস্ট ভোরে মৃত্যু হয় তাঁর। পরিবারের অভিযোগ, র্যাগিংয়ের কারণেই মৃত্যু হয়েছে ওই ছাত্রের। এই নিয়ে থানায় অভিযোগও দায়ের করেন মৃত ছাত্রের পরিবার। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে প্রাক্তনী এবং পড়ুয়া মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১২ জন যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় ধৃত। হস্টেলের গেটে পুলিশকে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে জয়দীপ ঘোষ নামে এক প্রাক্তনীকে গত শনিবার গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় এফআইআরে ৩০২ ধারা এবং ৩৪ নম্বর ধারা যুক্ত করেছিল পুলিশ। এ বার এই মামলায় ধৃতদের বিরুদ্ধে র্যাগিং বিরোধী আইন যুক্ত করার আবেদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।