আড্ডা: একসঙ্গে কিছু ক্ষণ এ শহরের প্রবীণেরা। মঙ্গলবার, সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে। ছবি: রণজিৎ নন্দী
কখনও চুরি, কখনও ডাকাতির জন্য দুষ্কৃতীদের লক্ষ্য হচ্ছেন নিঃসঙ্গ প্রবীণ বাসিন্দারা। সম্প্রতি শহরে পরপর এমন কয়েকটি ঘটনার পরে লালবাজার ওই বয়স্ক দম্পতিদের নিরাপত্তায় একাধিক নির্দেশ জারি করেছিল। এ বার তাঁদের সুরক্ষা এবং দেখভালের জন্য স্থানীয় ক্লাবগুলির সাহায্য চাইল পুলিশ।
লালবাজারের খবর, ইতিমধ্যেই উত্তর কলকাতার টালা, সিঁথি এবং চিৎপুর থানার তরফে স্থানীয় ক্লাবগুলির সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। ক্লাবের সদস্যেরা যাতে নিজেদের এলাকায় থাকা নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের খোঁজখবর রাখেন, সে ব্যাপারে থানার আধিকারিকেরা তাঁদের কাছে আবেদন করেছেন। যে কোনও প্রয়োজনে পুলিশ পৌঁছনোর আগে যেন স্থানীয় ক্লাব বা প্রতিবেশীরাই বয়স্ক মানুষগুলির সাহায্যে এগিয়ে আসেন, সে কথাও বলা হয়েছে। এর জন্য ক্লাবের সদস্যদের ফোন নম্বর তুলে দেওয়া হয়েছে প্রবীণদের হাতে। কোনও পাড়ায় আবার বৈঠক করে স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে সেই দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি বেহালা, কড়েয়া ও নেতাজিনগরে নিঃসঙ্গ দম্পতিরা দুষ্কৃতীদের নিশানা হয়েছেন। তিন জায়গাতেই খুন হতে হয়েছে ওই প্রবীণদের। তার পরেই কী ভাবে বয়স্কদের দেখভাল করা যায়, তা নিয়ে পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন কমিশনার অনুজ শর্মা। সেখানে ঠিক হয়, স্থানীয় থানার ওসিকে তাঁর এলাকার প্রবীণদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে।
পাশাপাশি, প্রতিটি থানাকে বলা হয় তাদের এলাকায় কত জন নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধা রয়েছেন সেই তালিকা তৈরি করতে। তাঁদের দেখভালের জন্য প্রতিটি থানার তরফে এক জন করে কনস্টেবল নিয়োগ করা হয়। এ ছাড়া ওই বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের খোঁজ নেওয়ার জন্য থানার পুলিশকর্মীরা তাঁদের সপ্তাহে এক দিন ফোন করেন। একই সঙ্গে নিঃসঙ্গ প্রবীণদের জন্য কলকাতা পুলিশের উদ্যোগ ‘প্রণাম’কে আরও সক্রিয় করা হয়েছে। পুলিশের একাংশের দাবি, প্রবীণ মানুষদের সুরক্ষায় যাতে কোনও ঘাটতি না থাকে, সে জন্যই ক্লাবগুলিকে এগিয়ে আসতে বলা হয়েছে।
টালা থানার একটি ক্লাবের তরফে অর্ণব দে তপাদার পুলিশের এই প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে জানান, তাঁদের ক্লাবের তরফে তিন জন সদস্যের ফোন নম্বর প্রবীণদের দেওয়া হয়েছে। যাতে তাঁরা প্রয়োজনে ফোন করে সাহায্য চাইতে পারেন। একই ভাবে পুলিশের আবেদনে সাড়া দিয়েছে সিঁথি অঞ্চলের ক্লাবগুলিও।
পুলিশের দাবি, টালার বড় ক্লাবগুলি তাঁদের এলাকার বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য পুজোর দিনগুলিতে বিশেষ ব্যবস্থা করেছেন। তাঁরা যাতে মণ্ডপে বসে পুজো উপভোগ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছে।