প্রতীকী ছবি।
একবালপুরের বেঙ্গলি শাহ ওয়ারসি লেনের সাবা খাতুন ওরফে নয়নার হত্যাকাণ্ডের জট কাটল না। কেন খুন করা হল বছর বাইশের তরুণীকে? কে বা কারা করল এই কাজ? এ সবের উত্তর খুঁজতে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে তদন্তকারীরা দফায় দফায় কয়েক জনকে জেরা করে চলেছেন। খুনের কারণ সম্পর্কের টানাপড়েন, না কি মাদক-যোগ, সেই উত্তরও খুঁজছেন তাঁরা।
বুধবার গভীর রাতে একবালপুর থানার এম এম আলি লেনের একটি বাড়ির সামনের ফুটপাতে মেলে সাবার বস্তাবন্দি দেহ। তাঁর ডান হাতে সিগারেটের ছেঁকার দাগ এবং পায়ে নখের আঁচড় পাওয়া গিয়েছিল। ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উঠে আসে সাবাকে শ্বাসরোধ করে খুন করার বিষয়টি। কিন্তু খুন করার পরে কে বা কারা তাঁকে বস্তাবন্দি করে ৭এফ, এমএম আলি লেনের ফুটপাতে ফেলে গেল? তদন্তকারীদের কথায়, যে-ই ফেলে যাক সে জানত যে ওই রাস্তার সিসি ক্যামেরা খারাপ। আর সেটা জানা সম্ভব স্থানীয় লোকজনের পক্ষেই।
যে বন্ধুর বাড়িতে সাবা দু’মাস ধরে থাকছিলেন, তাঁর মা রেশমা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় ওয়াসিম বিল্ডার ওরফে ইমরান নামে এক যুবক সাবাকে ফোন করে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। যদিও বৃহস্পতিবার তা অস্বীকার করে ইমরান জানান, তিনি ফোনে সাবার সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সাবাকে ডেকেছিলেন রোহিত ওরফে মহম্মদ সাজিদ হোসেন নামে এক জন। এই রোহিতের বাড়ির সামনের ফুটপাতেই মিলেছিল তরুণীর দেহটি।
প্রশ্ন, সাজিদ খুন করে নিজের বাড়ির সামনের ফুটপাতে দেহ ফেলে রাখবেন কেন? তা ছাড়া ইমরান যদি না ডেকে থাকেন, তা হলে সাবা কেন রেশমাকে মিথ্যা বলেছিলেন? পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, খুনের আগে কারও সঙ্গে সাবার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছিল। তবে তা জোর করে না উভয়ের সম্মতিতে এ নিয়ে তদন্তকারীরা কিছু বলেননি।
যে-ই খুন করে থাকুক, সে সাবার ঘনিষ্ঠ বলেই তদন্তে উঠে আসছে। কারণ, সন্ধ্যায় স্কুটার নিয়ে রোল কিনে এনেও কারও ফোন পেয়ে তা না খেয়েই বেরিয়ে গিয়েছিলেন সাবা। রেশমা জানাচ্ছেন, সাবার ফোন ওই রাতে সাড়ে ন’টার সময়ে বন্ধ ছিল। যদিও তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, সাবাকে খুন করা হয়েছিল রাত দশটা থেকে দুটোর মধ্যে।
আরও প্রশ্ন, খুনের পরিকল্পনা করে কি সাবাকে ডাকা হয়েছিল? না কি গোলমালে জড়িয়ে পড়ায় খুন হতে হয়? এ দিকে, শুক্রবার সাবার বোন সুনয়না জানান, পুলিশ তাঁদের কিছু জানায়নি। তাঁরা লোকের মুখে শুনছেন, যে পুলিশ ইমরান ও সাজিদকে ডেকেছে।