হাওড়ার উপেন্দ্রনাথ মিত্র লেনে এ ভাবেই কন্টেনমেন্ট জ়োন টপকে যাচ্ছেন এক বাসিন্দা। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার,
সকালের ছবিটা বদলে গেল বিকেলে। সকালের ঢিলেঢালা ভাব বিকেল থেকে উধাও। কন্টেনমেন্ট জ়োনের বাইরে পাহারায় পুলিশ। আর ভিতরে এলাকা সুনসান।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা থেকে শহরের কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলিতে এই চিত্রই ধরা পড়েছে। কলকাতার ২৫টি কন্টেনমেন্ট জ়োনের তালিকা বুধবারই প্রকাশ করেছিল প্রশাসন। ওই সব জ়োন থেকে যাতে কেউ বাইরে আসতে না পারেন, তার জন্য বসেছে পুলিশ পিকেট। সকালের দিকে অবশ্য বেশ কয়েকটি কন্টেনমেন্ট জ়োন গার্ডরেল দিয়ে আটকে দেওয়ার পরেও সেখানে লোকজনকে যাওয়া-আসা করতে দেখা গিয়েছিল। বিকেলে তা আর হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, এক জন করে অফিসারের সঙ্গে তিন জন পুলিশকর্মী কন্টেনমেন্ট জ়োনের বাইরে পাহারা দিচ্ছেন। আবার স্থানীয় থানার তরফেও আলাদা ভাবে পুলিশি নজরদারি চলছে। বাসিন্দাদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য আলিপুর, ভবানীপুর-সহ বিভিন্ন এলাকার কন্টেনমেন্ট জ়োনের বাসিন্দাদের নিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বাসিন্দাদের পাশাপাশি এলাকার পুলিশকর্মী ও স্থানীয় পুর প্রতিনিধিরাও থাকছেন। বাসিন্দারা তাঁদের প্রয়োজনের কথা লিখলে তা পুলিশের তরফে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আবার বেলেঘাটা, উল্টোডাঙা, ফুলবাগানের কন্টেনমেন্ট জ়োনের বাসিন্দাদের স্থানীয় থানার অফিসারদের নম্বর দেওয়া হয়েছে। যাতে তাঁদের প্রয়োজনে ওই অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
লালবাজার জানিয়েছে, এ দিন দুপুর থেকেই শীর্ষ কর্তারা স্থানীয় থানার পুলিশকে নিয়ে কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলি পরিদর্শন করেন। খতিয়ে দেখেন সব ব্যবস্থা। ভবানীপুরের চক্রবেড়িয়া রোড কন্টেনমেন্ট জ়োনে। যার ভিতরে রয়েছে তিনটি পৃথক কন্টেনমেন্ট এলাকা। এক পুলিশকর্তা জানান, বিভিন্ন কন্টেনমেন্ট জ়োনের ভিতরে ওই রকম একাধিক এলাকা রয়েছে, যেখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের পরিবার রয়েছে। ওই সব এলাকায় বিশেষ ভাবে নজরদারি চলছে।
পুলিশ জানিয়েছে, কন্টেনমেন্ট জ়োনের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি অফিস-সহ সব ধরনের দোকান ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। তাই ওই সমস্ত এলাকায় বাইরের কাউকে দেখলেই তাঁর পরিচয় জানার পাশাপাশি কেন তিনি সেখানে এসেছেন, জানতে চাওয়া হচ্ছে। এ দিন বিকেলে বেলেঘাটার কন্টেনমেন্ট জ়োন তারণকৃষ্ণ রোড এবং চাউলপট্টি রোডের সংযোগস্থলে দেখা যায়, পুলিশকর্তারা সেখানে নজরদারি চালাচ্ছেন। তাঁরা জানান, বাইরে থেকে ভিতরে বা ভিতর থেকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি নেই। তবে কেউ কোনও প্রয়োজনে সাহায্য চাইলে পুলিশকর্মীরা তা করে দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: আতঙ্ক বাড়িয়ে করোনা-হানা হাওড়া পুরসভায়
এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘বুধবারই পুলিশ কমিশনার কঠোর ভাবে ওই লকডাউন পালনের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মতো পাহারা দিচ্ছি আমরা।’’