যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেল। —ফাইল চিত্র।
ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার তদন্তে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও কয়েক জন পড়ুয়ার ভূমিকা খতিয়ে দেখতে চায় পুলিশ। সোমবার ১০ পড়ুয়াকে যাদবপুর থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রথম বর্ষের কয়েক জন পড়ুয়া এবং হস্টেলের আবাসিক। অন্য দিকে, বাংলা বিভাগের এক পড়ুয়াকে ডেকে পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুসন্ধান কমিটি।
গত বুধবার রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের এ-২ ব্লকের নীচে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। র্যাগিংয়ের কারণে মৃত্যু বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রের পরিবার। ছেলের মৃত্যুতে হস্টেলের আবাসিকদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন ছাত্রের বাবা। খুনের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করেছে কলকাতা পুলিশ। এই ঘটনায় শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী এবং হস্টেলের আবাসিক সৌরভ চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার সকালে গ্রেফতার করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও দুই পড়ুয়া দীপশেখর দত্ত এবং মনোতোষ ঘোষকে। তাঁরা সকলেই পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। দেশের প্রথমসারির বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘিরে হইচই পড়ে গিয়েছে।
গত শনিবার আলিপুর আদালতে সরকারি আইনজীবী সৌরিন ঘোষাল বলেছিলেন, ‘‘একটা অত্যাচারের গল্প পাচ্ছি।’’ যদিও তিনি ‘র্যাগিং’ শব্দটি উচ্চারণ করেননি। ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছেন প্রাক্তনীদের একাংশ। বুধবার রাতে ঠিক কী ঘটেছিল, তা জানতে পড়ুয়াদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পুলিশ। ছাত্রমৃত্যুর পর কোনও কোনও পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল ছেড়ে চলে গিয়েছেন। অনেকে আবার শহরের বাইরে গিয়েছেন। তাঁরা কারা? কেনই বা হস্টেল ছেড়ে দিলেন? এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। যাঁরা বুধবারের পর থেকে হস্টেল ছেড়েছেন, তাঁদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। ছাত্রমৃত্যুর সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগ আছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে তা-ও। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল রবিবারই জানিয়েছিলেন, এই ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্ত চলছে। শীঘ্রই সব রহস্যের সমাধান হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
(পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী রবিবার তাঁর একটি ফেসবুক পোস্টে যাদবপুরের মৃত ছাত্রের নাম না-লিখতে অনুরোধ করেছেন। এই মৃত্যুমামলা অপ্রাপ্তবয়স্কদের উপর যৌন নির্যাতন বিরোধী ‘পকসো’ আইনে হওয়া উচিত বলেও তাঁর অভিমত। কমিশনের উপদেষ্টার অনুরোধ মেনে এর পর আনন্দবাজার অনলাইন মৃত ছাত্রের নাম এবং ছবি প্রকাশে বিরত থাকছে।)