সিসি কামেরা থেকে পাওয়া বাইকের ছবি।
প্রায় তিন দিন কেটে গেলেও হদিশ মিলল না কড়েয়ার সেই বাইক এবং তার চালকের। সোমবার রাতে ওই বাইকচালকই সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউতে একটি শপিং মলের সামনে এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীকে বাইকের সঙ্গে টেনেহেঁচড়ে নিয়ে যান প্রায় ১০০ মিটার।
রাস্তায় ট্র্যাফিক পুলিশের লাগানো সিসি ক্যামেরায় সেই রাতের ঘটনা ধরা পড়লেও, ফুটেজ থেকে হদিশ মেলেনি ওই বাইকের নম্বরের। পুলিশের দাবি, সে কারণে এখনও পাকড়াও করা যায়নি ওই বাইকচালককে। তবে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে বাইকটির মডেল বোঝা গিয়েছে। সেই সূত্র ধরেই বাইকের মালিকের হদিশ পাওয়ার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। তদন্তকারীদের দাবি, বাইক সম্পর্কে যাঁরা ওয়াকিবহাল, তাঁরা ফুটেজ থেকে ওই বাইকটি অস্ট্রিয়ার একটি বিখ্যাত সুপারবাইক কোম্পানির বলে জানিয়েছেন। ২০১৪ থেকে ওই কোম্পানি ভারতের একটি বিখ্যাত বাইক প্রস্তুতকারক সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধে। তার পর ভারতের বাজারে আনে ওই বাইক।
তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, অস্ট্রীয় সংস্থার তৈরি একটি বিশেষ মডেলের অতি শক্তিশালী ইঞ্জিনের বাইক সে দিন রাতে ছিল। দাম আড়াই লাখ টাকা হলেও, রাস্তায় নামাতে খরচ প্রায় তিন লাখ টাকা। তদন্তকারীদের দাবি ওই মডেলের বাইকটি ভারতের বাজারে এসেছে ২০১৭ সালে। তবে ওই নির্দিষ্ট বাইকটি আরও নতুন বলে ধারণা গোয়েন্দাদের। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশ এলাকায় ওই বাইকের দু’টি শোরুম রয়েছে— চৌরঙ্গি কোর্ট এবং রাজডাঙা মেন রোডে। এ ছাড়াও ভিআইপি রোডের রঘুনাথপুরে একটি শোরুম রয়েছে। কলকাতার কাছাকাছি হাওড়ায় দু’টি এবং হুগলির ভদ্রেশ্বরেও একটি শোরুম রয়েছে।
এক তদন্তকারী আধিকারিক ইঙ্গিত দেন, এ ধরণের বাইক অন্য কোম্পানির মতো সংখ্যায় বেশি বিক্রি হয় না। তাই শোরুমে বিক্রি হওয়া বাইকের মালিকের নাম ঠিকানা ধরে ওই চালককে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন। তবে সেখানেও একটি সমস্যা রয়েছে। অনেকেই বাইক বিক্রি করে দেন। সে ক্ষেত্রে শোরুমে পরবর্তী মালিকের ঠিকানা থাকে না। তবে হাল ছাড়ছেন না তদন্তকারীরা।
অন্য দিকে, তদন্তকারীদের অন্য একটি দল এলাকা ধরে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন ওই বাইক আরোহীকে। কারণ কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা দমন শাখার কাছে খবর, ওই বাইকচালক স্থানীয় বাসিন্দা।
সোমবার রাতে বেপরোয়া বাইকচালকদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান চলাকালীন ওই বাইকের চালক হেলমেটহীন অবস্থায় পালাতে গিয়ে প্রথমে এক পথচারীকে ধাক্কা মারেন। এর পর ফের পালাতে গেলে তপন ওঁরাও নামে এক পুলিশকর্মী বাইকের পিছনের অংশ ধরে ফেললে, তাঁকে শুদ্ধ গতি বাড়িয়ে পালাতে যান। ওই পুলিশ কর্মী রাস্তায় পড়ে গেলে তাঁকে রাস্তা দিয়ে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যায় ওই বাইকচালক। এর পরই কড়েয়া থানায় ওই অজ্ঞাত পরিচয় বাইকচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ।