নিহত দীপক দাস ফাইল চিত্র।
আমহার্স্ট স্ট্রিট এলাকায় দিনেদুপুরে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে খুনের ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। তবে প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরে ওই ঘটনা। তার সঙ্গে অন্য কোনও কারণ আছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। তাদের দাবি, সেই ফুটেজে দু’জনকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। এ দিকে, বৃহস্পতিবার এসএসকেএমে ওই ঘটনায় নিহত দীপক দাসের দেহের ময়না-তদন্ত হয়।
উল্লেখ্য, বুধবার দুপুরের পরে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিটে দীপকের অফিসে ঢুকে তাঁকে গুলি করে দুই আততায়ী। পুলিশ জানিয়েছিল, তাদের মধ্যে এক জনের নাম রাকেশ দাস। ঘটনার তদন্তে নেমে রাকেশের এক সঙ্গীর নামও জানতে পারে পুলিশ। আরও জানা যায়, আদতে বিহারের বাসিন্দা রাকেশ দীপকের কাছে কাজ করত। কিন্তু কয়েক মাস আগে তার কাজ চলে যায়। দীপকের পরিবারের দাবি, বিভিন্ন সময়ে টাকা-পয়সা চুরি করত রাকেশ। তার বিরুদ্ধে একাধিক দুষ্কর্মেরও অভিযোগ ছিল। নিহতের বোন সুমিত্রা দাস বলেন, ‘‘দাদা যখন রাকেশকে কাজে নিয়েছিল, তখন ওর সম্পর্কে কিছুই জানত না। মাঝেমধ্যেই ব্যবসার টাকা চুরি করত রাকেশ। পরে দাদা ওর একাধিক অপরাধের কথা জানতে পেরে ওকে ছাড়িয়ে দেয়।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকেই পলাতক রাকেশ ও তার সঙ্গী।
মৃতের পরিবার সূত্রের খবর, দীপক আগে মুরগির ব্যবসা করতেন। মাস ছয়েক আগে তা ছেড়ে প্রোমোটিংয়ের ব্যবসা শুরু করেন। কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিটে এক বন্ধুর দোকানের মধ্যে একটি ঘর অফিস হিসাবে ভাড়া নিয়েছিলেন তিনি। প্রোমোটিং সংক্রান্ত বিবাদের জেরে এই ঘটনা কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, বুধবার অফিসেই ছিলেন দীপক। সেই সময়ে রাকেশ এবং আর এক ব্যক্তি সেখানে আসে। কোনও কারণে উভয়পক্ষে বচসা শুরু হয়। অভিযোগ, সেই সময়ে রাকেশ বন্দুক বার করে কাছ থেকে দীপককে লক্ষ্য করে দু’রাউন্ড গুলি করে। একটি গুলি লাগে দীপকের গলায়। সে দিনই লালবাজারের গোয়েন্দাদের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে গিয়ে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবার কয়েক জনকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কথা বলা হচ্ছে দীপকের পরিবারের লোকদের সঙ্গেও। আপাতত সিসি ক্যামেরার ফুটেজকে হাতিয়ার করে রাকেশ ও তার সঙ্গীর খোঁজ পেতে চাইছেন গোয়েন্দারা। তদন্তকারীদের অনুমান, অভিযুক্তেরা ভিন্ রাজ্যে পালিয়ে গিয়ে থাকতে পারে। পুলিশ সূত্রের খবর, তাদের খোঁজে একাধিক দলে ভাগ হয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।