লালবাজার। ছবি: সংগৃহীত।
গাড়ির বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্পিড ক্যামেরা বসানো হয়েছে শহরে। সেই সঙ্গে শহরের কয়েকটি রাস্তা এবং উড়ালপুলে গাড়ির সর্বাধিক গতিবেগও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। গতির বিধি ভাঙলে স্পিড ক্যামেরার সাহায্যে করা হচ্ছে জরিমানাও। তা সত্ত্বেও এক শ্রেণির গাড়িচালক পুলিশের স্পিড ক্যামেরা বা গতি-বিধির তোয়াক্কা করছেন না বলে অভিযোগ। সেই বেপরোয়া গতিতে লাগাম পরাতে বিধি ভাঙা গাড়ির চালক বা মালিকদের সতর্ক করার পাশাপাশি তাঁদের কাউন্সেলিং-ও শুরু করল লালবাজার।
কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, দু’চাকা ও চার চাকার গাড়ি গতির নিয়ম ভাঙলেই তা স্পিড ক্যামেরার মাধ্যমে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এ ভাবে প্রতিদিন শহরে ১০-১৫টি গাড়ির বিরুদ্ধে গতি-বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা রুজু করছে পুলিশ। স্বয়ংক্রিয় এই পদ্ধতিতেই ওই মামলা সম্পর্কিত বার্তা পৌঁছে যায় মালিকের বা চালকের কাছে। কিন্তু এর পরেও দেখা যাচ্ছে, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর প্রবণতা কমছে না। অগত্যা অবাধ্য চালকদের বাগে আনতে গাড়ির মালিকদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে ট্র্যাফিক পুলিশ। প্রথমে তাঁদের স্থানীয় থানার মাধ্যমে ট্র্যাফিক গার্ডে ডেকে পাঠানো হচ্ছে। তার পরে অভিযুক্ত গাড়ির মালিক বা চালককে বোঝানো হচ্ছে, কত গতিতে গাড়ি চালানো হয়েছে এবং কত গতিতে তা চালানো উচিত ছিল। এক পুলিশকর্তা জানান, মালিক ও চালকদের কাউন্সেলিং করা হচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে তাঁরা গাড়ি চালানোর সময়ে সতর্ক থাকেন। পাশাপাশি, বিধি ভাঙায় জরিমানার টাকাও দ্রুত মেটাতে বলা হচ্ছে তাঁদের।
উল্লেখ্য, অনেক সময়ে বাড়ির কাউকে না জানিয়েই প্রমোদভ্রমণে বেরিয়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়েছেন কোনও তরুণ বা তরুণী। এমন ঘটনা রুখতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, ট্র্যাফিক কন্ট্রোল রুমের তরফে অভিযুক্ত গাড়ির মালিকের ঠিকানা সংশ্লিষ্ট ট্র্যাফিক গার্ডে পাঠানো হচ্ছে। এর পরে ট্র্যাফিক গার্ডের কর্মীরা মালিক বা চালকের সঙ্গে দেখা করে কথা বলছেন। ট্র্যাফিক পুলিশের এক আধিকারিক জানান, বিধি ভাঙা একটি গাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি জানেনই না, তাঁর গাড়ি বেপরোয়া গতিতে ট্র্যাফিক আইন অমান্য করেছে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তাঁর ছেলে রাতে গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিলেন কাউকে না জানিয়ে।
পুলিশের দাবি, অভিযুক্ত গাড়ির মালিক বা চালকদের কাউন্সেলিং করার পাশাপাশি বুঝিয়ে বলা হচ্ছে, বেপরোয়া গতিতে চালালে পুলিশ কী কী কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে। সেই সঙ্গে বকেয়া জরিমানাও আদায় করা হচ্ছে। লালবাজার সূত্রের খবর, কাউন্সেলিংয়ের পরে গাড়ির মালিক ও চালকদের অনেকেই অঙ্গীকার করছেন যে, এর পর থেকে গতি-বিধি ভাঙবেন না। সেই সঙ্গে বাড়ির অন্য কেউ যাতে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি না চালান, সে দিকেও নজর রাখবেন তাঁরা।