ঋষি বুদ্ধদেব।
ট্র্যাভেল ব্লগের ভিডিয়ো তৈরির নামে তরুণীকে তাইল্যান্ডে নিয়ে গিয়ে মারধর এবং আটকে রাখার অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুই তরুণীকে হাজিরার নোটিস পাঠাল কলকাতা পুলিশ। তাঁদের এক জন মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরের বাসিন্দা, অন্য জন কলকাতার। সূত্রের খবর, ওই দুই তরুণী মূল অভিযুক্তের সঙ্গে ঘটনায় সরাসরি যুক্ত ছিলেন বলে তদন্তকারীদের সন্দেহ। এ দিকে, ঘটনায় পুলিশি হেফাজতে থাকা ঋষি বুদ্ধদেব নামের যুবককে শুক্রবার আদালতে তোলা হলে ৯ অগস্ট পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
বেনিয়াপুকুরের গোরাচাঁদ রোডের বাসিন্দা এক তরুণী সম্প্রতি তাঁকে তাইল্যান্ডে নিয়ে গিয়ে মারধর করে আটকে রাখা এবং মুক্তিপণ চাওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন বেনিয়াপুকুর থানায়। তরুণীর দাবি, ‘বুক অ্যান্ড রিল্যাক্স’ নামে একটি ট্র্যাভেল সংস্থা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে কাজের প্রস্তাব দেয়। তাইল্যান্ডে বিনা খরচে ঘোরা এবং ভিডিয়ো করার বদলে পারিশ্রমিক দেওয়ার কথা বলে। তবে ১৩ জুলাই ওই সংস্থার সঙ্গে ব্যাঙ্কক পৌঁছলে তরুণীর পাসপোর্ট কেড়ে অনলাইন গেম শোয়ে জোর করে অংশগ্রহণ করানোর চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। তরুণী অভিযোগে জানান, সংস্থার মালিক ঋষি এবং তাঁর সঙ্গী দুই তরুণী তাঁকে মারধর করেছেন। এর পরেই দিল্লি থেকে ঋষিকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ।
তদন্তে নেমে ধৃতের কম্পিউটর, মোবাইল ফোন এবং ফোনের তালিকা খতিয়ে দেখে দুই তরুণীকে চিহ্নিত করে পুলিশ। ওই দুই তরুণী ঋষির সঙ্গেই অভিযোগকারীকে নিয়ে তাইল্যান্ড গিয়েছিলেন বলে জানতে পারে তারা। ব্যাঙ্কক এবং পাটায়ায় তাঁরাই অভিযোগকারী তরুণীকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ। ওই তরুণীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে তদন্তকারীরা দেখেন, ঋষির সঙ্গে দীর্ঘদিন থেকেই যুক্ত তাঁরা। ট্র্যাভেল সংস্থার আড়ালে এক ধরনের অনলাইন শো চালাতেন তাঁরা। বিদেশে শুটিংয়ের নামে মেয়েদের নিয়ে গিয়ে সেই শোয়ে অংশগ্রহণ করানো হত।
এর আগে অভিযোগ দায়ের হয়নি কেন? মামলার তদন্তকারী, কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ঋষির নামে আগেও আর্থিক প্রতারণার মামলা দায়ের হয়েছে। তবে ওই ধরনের অনলাইন শো এ দেশে নিষিদ্ধ নয়। তাই নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের না হওয়া পর্যন্ত ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। আর সবটাই হয় বিদেশে।’’ অভিযোগকারী তরুণী বললেন, ‘‘ঋষির পাসপোর্ট বাতিল করার আবেদন করছি আদালতে। নয়তো দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে একই কাজ করবে।’’