—প্রতীকী চিত্র।
কলকাতার শিয়ালদহে নীলরতন সরকার হাসপাতালের (এনআরএস) সামনে পকেটমার সন্দেহে এক যুবককে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল মঙ্গলবার। সেই ঘটনার বিস্তারিত তথ্য জানাল পুলিশ। ওই যুবক কোথা থেকে বাসে উঠেছিলেন, তার পর বাসে কী কী ঘটেছিল, কারা যুবককে কখন মারধর করলেন, পুলিশের তরফে সে সব তথ্য জানানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, আক্রান্ত যুবকের নাম আসগর আলি, বয়স ২৪ বছর। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টে থেকে পৌনে ৫টার মধ্যে ওই যুবক বেলেঘাটা মেন রোডের ক্লক টাওয়ার থেকে বাসে ওঠেন। গন্তব্য ছিল চাঁদনি চক। বাসের মধ্যে কয়েক জন যাত্রী তাঁকে পকেটমার বলে সন্দেহ করেন। বাসেই হেনস্থা করা হয় যুবককে। তিনি এনআরএস হাসপাতালের সামনে বাস থেকে নেমে পড়েন।
যুবক পুলিশকে জানিয়েছেন, বাস থেকে নেমে পড়ার পরেও তাঁকে রেহাই দেওয়া হয়নি। তিন থেকে চার জন যাত্রী ওই বাস থেকে তাঁর সঙ্গেই নেমে পড়েন এবং তাঁকে মারতে শুরু করেন। অভিযোগ, যুবকের কলার ধরে তাঁকে ঘুষি মারা হয়। ধাক্কা মারতে মারতে নিয়ে যাওয়া হয় এনআরএসের দরজার সামনে। সেখানে যুবককে মাটিতে ফেলে বেল্ট দিয়ে মারধর করেন ওই অপরিচিত ব্যক্তিরা। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে স্থানীয়েরা জড়ো হলে যাঁরা মারধর করছিলেন, তাঁরা সেখান থেকে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেখানে পৌঁছে যায় পুলিশও।
যুবককে উদ্ধার করে পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করায়। তার পর আক্রান্ত যুবক পুলিশের কাছে গোটা ঘটনা সম্পর্কে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর বয়ান রেকর্ড করে পুলিশ। অভিযোগের ভিত্তিতে অপরিচিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কয়েক দিন ধরে রাজ্যের নানা প্রান্তে চোর, ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা ঘটে চলেছে। পুলিশি প্রচার চলছে। নিজের হাতে আইন তুলে না নেওয়ার আবেদন করা হচ্ছে। কিন্তু, তার পরেও এই রকম ঘটনা ঘটছে। মঙ্গলবারই নদিয়ার নবদ্বীপ, কলকাতার উপকণ্ঠে আড়িয়াদহে গণপিটুনির অভিযোগ উঠেছে। এর আগে বৌবাজারের হস্টেলে চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। সল্টলেক থেকেও অনুরূপ ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। তার মাঝে মঙ্গলবার শিয়ালদহে এমন ঘটনা উদ্বেগ বাড়িয়েছে।