প্রতীকী ছবি।
মৃত্যুর পরে এক বৃদ্ধের দেহ বরফ দিয়ে কফিনে রেখে দেওয়া হয়েছিল বাড়িতেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করল। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে যাদবপুরের রিজেন্ট কলোনি এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সমীররঞ্জন শূর (৬৮)। তবে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানিয়েছে, হৃদ্যন্ত্র বিকল হয়ে বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ খুনের যে অভিযোগ তুলেছেন তা ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, সমীরবাবু দীর্ঘদিন ধরে টিবি-সহ বিভিন্ন রোগে প্রায় শয্যাশায়ী। তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে দিন কয়েক আগে পাড়ার একটি ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে পঞ্জাব বেড়াতে যান। মঙ্গলবার তাঁরা ফিরেছেন। এই কয়েক দিন দুপুরে সমীরবাবুর শ্যালক বিশ্বনাথ দাস তাঁকে খাবার খাইয়ে যেতেন। পুলিশ জানায়, সোমবার দুপুর একটা নাগাদ বিশ্বনাথ গিয়ে দেখেন, সমীরবাবু সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েছেন। জল খাইয়েও জ্ঞান না ফেরায় এক হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসককে ডেকে আনেন বিশ্বনাথবাবু। ওই চিকিৎসক এসে সমীরবাবুকে মৃত ঘোষণা করে ডেথ সার্টিফিকেট দেন। পুলিশ সূত্রের খবর, এর পরে বিশ্বনাথবাবু দিদিকে ফোনে বিষয়টি জানান। পুলিশকে সমীরবাবুর স্ত্রী জয়ন্তীদেবী জানিয়েছেন, তিনি ও মেয়ে কলকাতায় না ফেরা পর্যন্ত পচন এড়াতে কফিনে বরফ দিয়ে দেহটি রাখার পরামর্শ দেন ক্লাবের কয়েক জন সদস্য। সেই মতো ব্যবস্থা করেন বিশ্বনাথবাবু-সহ স্থানীয় কয়েক জন। তাঁদের বরফ নিয়ে বাড়িতে ঢুকতে দেখে সন্ধ্যায় সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। তাঁরা থানায় খবর দেন। পুলিশ দেহ এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
তবে সমীরবাবুর দেহ কেন বাড়িতেই রাখা হল বা ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য কেন হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসককে ডেকে আনা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই চিকিৎসক সমীরবাবুর চিকিৎসা করতেন। তাই বিশ্বনাথবাবু তাঁকেই খবর দেন। পুলিশ জানিয়েছে, এ নিয়ে মৃতের পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তাই পুলিশও বিষয়টি নিয়ে আপাতত তদন্ত করছে না। লালবাজারের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বৃদ্ধ দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, স্থানীয়দের অভিযোগ ভিত্তিহীন। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে।’’
মৃতের মেয়ে প্রিয়াঙ্কা শূর বলেন, ‘‘আমরা বাইরে ছিলাম। পাড়ার বাসিন্দাদের সাহায্য নিয়ে মামা যতটা পেরেছেন করেছেন। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য কয়েক জন প্রতিবেশী অহেতুক মামাকে দোষারোপ করছেন।’’