লালবাজার। —ফাইল চিত্র।
ব্রিটিশ আমলের ভারতীয় দণ্ডবিধি (আইপিসি) এবং ফৌজদারি কার্যবিধি (সিআরপিসি) আইন বাতিল হয়ে আগামী পয়লা জুলাই চালু হচ্ছে দণ্ড সংহিতা আইন। তা কার্যকর করার জন্য আগেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে কলকাতা পুলিশকে ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানানো হয়েছিল। লালবাজার জানিয়েছে, নতুন এই আইন চালু হয়ে গেলে পুলিশের ব্যবহার করা এত দিনের আইনের ধারা বদলে যাবে। এতে অসুবিধায় পড়তে পারেন কলকাতা পুলিশের অফিসার ও কর্মীরা। সেই সমস্যা কাটাতে তাঁদের জন্য ইতিমধ্যেই ধাপে ধাপে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন পুলিশকর্তারা।
পুলিশ সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং অ্যাকাডেমির সহকারী নগরপালের নেতৃত্বে কলকাতা পুলিশের দশটি ডিভিশনে গিয়ে সেখানকার থানার অফিসারদের এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি থানা থেকে প্রশিক্ষণে অংশ নিচ্ছেন সেখানকার ওসি, অতিরিক্ত ওসি এবং দুই থেকে তিন জন অফিসার। ইতিমধ্যেই চারটি ডিভিশনের সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার এবং সহকারী নগরপালদের এই প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। ভোটের মধ্যে এই প্রক্রিয়া কিছুটা বাধা পেলেও ভোটের পরে তা দ্রুত শেষ করা হবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে নতুন দণ্ড সংহিতা সংক্রান্ত তিনটি বিল পাশ হয়েছিল সংসদে। পরে তাতে সই করেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। আইন হিসাবে ওই তিনটি বিল কার্যকর হবে আগামী পয়লা জুলাই। এর ফলে বাতিল হয়ে যাবে ১৮৬০ সালে তৈরি ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’, ১৮৯৮ সালের ‘ক্রিমিনাল প্রসিডিয়োর কোড’ এবং ১৮৭২ সালের ‘ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট’। এই তিন আইনের জায়গায় আসবে যথাক্রমে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’, ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’ এবং ‘ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম’ আইন।
পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, নতুন আইনে এত দিনের বিভিন্ন ধারা বদলে যাচ্ছে। যেমন, নতুন আইন অনুযায়ী, কোনও কিছু বাজেয়াপ্ত করতে হলে তার পুরো প্রক্রিয়া ভিডিয়ো রেকর্ডিং করতে বলা হয়েছে। আবার, নতুন আইনের ধারায় অনলাইনে মামলা রুজু করা যাবে বলে জানানো হয়েছে। এক পুলিশ অফিসার জানান, পয়লা জুলাই থেকে কোনও অপরাধের অভিযোগ এলে নতুন আইন অনুযায়ী মামলা রুজু করা হবে। তবে ৩০ জুন পর্যন্ত মামলা রুজু এবং বিচার প্রক্রিয়া চলবে পুরনো ধারা অনুসারেই।