রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক রাখাটাও অন্যতম চ্যালেঞ্জ কলকাতা পুলিশের কাছে।
কোথাও মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ঢোকা-বেরোনোর রাস্তার দিক ঠিক করে দেওয়া, কোথাও আবার মণ্ডপে ওঠার পাটাতনের প্লাই বদলানোর পরামর্শ— বুধবার শহরের একাধিক পুজো মণ্ডপ ঘুরে গোটা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে এমনই নির্দেশ দিলেন লালবাজারের পুলিশকর্তারা। সেই সঙ্গে মণ্ডপ তৈরির সময়ে সমস্ত বিধি মানা হয়েছে কি না, তা-ও দেখা হয়। আজ, বৃহস্পতিবারও ফের শহরের একাধিক পুজো মণ্ডপ পরিদর্শন করা হবে বলে জানিয়েছে লালবাজার।
করোনা-পর্ব কাটিয়ে দু’বছর পরে ফের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে এ বারের দুর্গাপুজো। তাই গত দু’বছরের তুলনায় ভিড় যে কয়েক গুণ বাড়বে, সে বিষয়ে এক প্রকার নিশ্চিত পুলিশকর্তারা। তাই পুজোর ক’দিন ভিড় নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি শহরের রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক রাখাটাও অন্যতম চ্যালেঞ্জ কলকাতা পুলিশের কাছে। তাই পুজোর দিনকয়েক আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখলেন পুলিশকর্তারা। একাধিক মণ্ডপ ঘুরে ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি সুনিশ্চিত করার দিকেও বাড়তি নজর দেন তাঁরা। সেই সঙ্গে প্রতিটি মণ্ডপে ঢোকা-বেরোনোর রাস্তা প্রশস্ত রাখা হচ্ছে কি না, সেই দিকটিও খতিয়ে দেখা হয়।
এ দিন সকালে প্রথমে কুমোরটুলি পার্কে যান পুলিশকর্তারা। ছিলেন কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) শুভঙ্কর সিংহ সরকার, ডিসি (ট্র্যাফিক) সুনীলকুমার যাদব-সহ পুলিশের একাধিক কর্তা। ছিলেন পুরসভা ও পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরাও। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ কুমোরটুলি পার্কে পৌঁছন পুলিশকর্তারা। মিনিট দশেক ঘুরে দেখার পরে সেখান থেকে মহম্মদ আলি পার্কে যান তাঁরা। সেখানেও দীর্ঘক্ষণ মণ্ডপ চত্বর ঘুরে দেখেন। উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি মণ্ডপের প্রবেশপথে প্লাইউডের মোটা পাটাতন বসানোর বিষয়ে পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন তাঁরা। মহম্মদ আলি পার্কের পুজোর সাধারণ সম্পাদক সুরিন্দর শর্মা বলেন, ‘‘নির্দেশ মতো গোটা পাটাতন ভেঙে ফেলা হয়েছে। কোনও রকম ঝুঁকি নেওয়া হবে না। নীচে লোহার কাঠামো তৈরি করে পুরোটা করে দেওয়া হবে।’’
মহম্মদ আলি পার্ক থেকে কলেজ স্কোয়ারে যান পুলিশকর্তারা। মহম্মদ আলি পার্ক থেকে কোন পথে দর্শনার্থীরা কলেজ স্কোয়ারে আসবেন ও কোন পথে বেরোবেন, গোটা কলেজ স্ট্রিট চত্বর ঘুরে তা খতিয়ে দেখেন যুগ্ম কমিশনার। প্রতি বছরই মেট্রো সংলগ্ন পুজোগুলিতে ভিড়ের চাপ দেখা যায়। এই বিষয়টিও মাথায় রাখছে পুলিশ। যুগ্ম কমিশনার (সদর) শুভঙ্কর সিংহ সরকার বললেন, ‘‘সব দিকেই নজর রাখা হচ্ছে। ২০১৯ সালে যে ভাবে গোটা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল, এ বছরও সেই ভাবে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা হবে।’’ এ দিন উত্তর-দক্ষিণ মিলিয়ে শহরের ১১টি পুজো মণ্ডপ পরিদর্শন করেন যুগ্ম কমিশনার (সদর)। আজ, বৃহস্পতিবারও আরও ন’টি মণ্ডপ পরিদর্শন করা হবে। এ দিন যুগ্ম কমিশনার (সদর) বলেন, ‘‘গত দু’বছরে কোভিডের জন্য মণ্ডপে ঢোকার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ ছিল। ভিড়ও তেমন ছিল না। এ বছর আমরা আশা করছি, সেই তুলনায় অনেক বেশি ভিড় বাড়বে। সেই মতো প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। পুজো মণ্ডপগুলিতেও ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা ঠিক আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কলকাতা পুলিশ প্রস্তুত।’’