মোহরকুঞ্জে চলছে শারীরচর্চার প্রশিক্ষণ। নিজস্ব চিত্র।
পরনে কালো স্যান্ডো গেঞ্জি। কালো হাফ প্যান্ট। দু’পায়ে ‘নি-গার্ড’। টানটান নির্মেদ চেহারায় যেন পর্দার পুলিশ অফিসার। তবে ইনি পর্দার নন, ঘোর বাস্তবের। কলকাতা পুলিশের শ্যামবাজার ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি রাজকুমার সিংহ। জানুয়ারি মাস থেকে মোহরকুঞ্জে বিনামূল্যে তিনি সব বয়সের প্রাতর্ভ্রমণকারীদের শারীরচর্চার প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। শিখতে আসছেন মহিলারাও। শারীরচর্চার সঙ্গে আত্মরক্ষারও পাঠ নিচ্ছেন তাঁরা।
আলিপুরের পুলিশ আবাসনে সপরিবার থাকেন রাজকুমার। ভোর সাড়ে ৫টার মধ্যে সস্ত্রীক মোহরকুঞ্জে পৌঁছে যান। আধ ঘণ্টা নিজেরা শারীরচর্চা করার পরে শুরু হয় অন্যদের প্রশিক্ষণ। চলে প্রায় এক ঘণ্টা। কখনও দৌড়, হাঁটা, কখনও বল নিয়ে ছোড়া। কখনও কসরতের তালিকায় থাকে মার্শাল আর্টও। হেসেখেলে তাঁর প্রশিক্ষণ দেওয়ার ধরনে মুগ্ধ সব বয়সের ছাত্রছাত্রীরাই।
সম্প্রতি প্রশিক্ষণের ফাঁকে বালিগঞ্জের বাসিন্দা রাজীব খুরানা বলেন, ‘‘জানুয়ারি থেকেই ওঁর সঙ্গে আলাপ। চেহারা দেখেই বুঝেছিলাম, উনি অ্যাথলিট।’’ বালিগঞ্জের বাসিন্দা নারায়ণ মোদীর কথায়, ‘‘প্রথম দিকে উনি স্ত্রীকে নিয়ে হাঁটার পাশাপাশি শারীরচর্চা করতেন। পরে আমাদের সঙ্গে আলাপ হয়। এখন ওঁর ক্লাস আমরা বাদ দিই না।’’
অ্যাথলেটিক্স, বক্সিং থেকে শুরু করে অশ্বারোহণ প্রতিযোগিতায় জাতীয় স্তরে অংশগ্রহণ করে খেতাব জিতেছেন রাজকুমার। ২০২১ সালে ইন্ডিয়ান পুলিশ মেডেল, ২০১৯ সালে মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে প্রসন্ন পদক জেতা রাজকুমার বলেন, ‘‘স্ত্রীকে নিয়ে শারীরচর্চা করার সময়ে আমার মনে হয়েছিল মোহরকুঞ্জে আসা অনেককে একটু প্রশিক্ষণ দিলে তাঁরা উপকৃত হবেন। সেই কাজটুকুই করছি।’’ তাঁর এই কাজ প্রশংসিত হয়েছে পুলিশের উপর মহলেও। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) শুভঙ্কর সিংহ সরকার বলেন, ‘‘রাজকুমারবাবু পুরো কলকাতা পুলিশ বাহিনীর আদর্শ হওয়া উচিত।’’