Illegal Construction

Illegal Construction: দুষ্কৃতীদের দাপট বন্ধে অবৈধ নির্মাণে রাশ টানার উদ্যোগ

কসবা, আনন্দপুর, একবালপুর, তিলজলা— বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত অভিযোগে বার বার সামনে এসেছে শহরের এই সব এলাকার নাম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৩৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

অতীতে একাধিক বার শহরের বেআইনি নির্মাণ মাথাব্যথার কারণ হয়েছে লালবাজারের। যা নিয়ে পুলিশ-পুরসভা বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু তার পরেও বন্ধ হয়নি অবৈধ নির্মাণ। এ বার সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি দুষ্কৃতী-তাণ্ডবের ঘটনার পরে পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে এই বেআইনি নির্মাণ ও সিন্ডিকেটের বিষয়টি। তাই আসরে নেমেছেন লালবাজারের শীর্ষ কর্তারা। একাধিক থানার আধিকারিকদের ডেকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে খবর।

Advertisement

কসবা, আনন্দপুর, একবালপুর, তিলজলা— বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত অভিযোগে বার বার সামনে এসেছে শহরের এই সব এলাকার নাম। আরও বেশ কিছু এলাকাতেও একই অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে ওই সব নির্মাণ ঘিরে দুষ্কৃতী-তাণ্ডবের ঘটনাও ঘটেছে। সম্প্রতি আনন্দপুর থানা এলাকার গুলশন কলোনিতে বোমাবাজির পাশাপাশি গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। তদন্তে নেমে আনন্দপুর থানার পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতারও করে। প্রাথমিক তদন্তে ওই ঘটনার পিছনে এলাকার বেআইনি নির্মাণের সমস্যার কথাই উঠে এসেছিল। এমনকি, স্থানীয় কাউন্সিলর নিজেই বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ করেছিলেন।

শুধু এই ঘটনাই নয়। গত জানুয়ারি মাসে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের বড়বাগান বস্তি এলাকা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে। কয়েক ঘণ্টার জন্য কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল গোটা পাড়া। দু’পক্ষের ইট বৃষ্টি, বোমাবাজি ও ভাঙচুরের ঘটনায় আহত হন কয়েক জন। তদন্তে নেমে চারু মার্কেট ও গল্ফ গ্রিন থানার পুলিশ গ্রেফতারও করে বেশ কয়েক জনকে। ওই ঘটনার তদন্তেও উঠে এসেছিল বেআইনি নির্মাণের যোগসূত্র।

Advertisement

সূত্রের খবর, কড়েয়া, রাজাবাজার, একবালপুর, গার্ডেনরিচ ছাড়াও তিলজলা, তপসিয়া, বেনিয়াপুকুর ও কসবার মতো বিভিন্ন এলাকায় বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত ভূরি ভূরি অভিযোগ রয়েছে। আর ওই সমস্ত বেআইনি নির্মাণ ঘিরে একাধিক জায়গায় একের পর এক গন্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে গত কয়েক মাসে। সেটাই মাথাব্যথা বাড়িয়েছে লালবাজারের কর্তাদের। শহরে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য কমাতে বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করতে চাইছেন তাঁরা। তাই থানাগুলিকে এ বিষয়ে কড়া হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে খবর।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি কয়েকটি থানার আধিকারিকদের লালবাজারে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। পুলিশকর্তারা তাঁদের কড়া হাতে নিজেদের এলাকায় বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করার নির্দেশ দেন বলে খবর। এমনই একটি থানার এক আধিকারিক বললেন, ‘‘বহু ক্ষেত্রেই দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্যের তদন্তে নেমে দেখা গিয়েছে, বিষয়টির গোড়ায় রয়েছে বেআইনি নির্মাণ। যার সঙ্গে হামেশাই রাজনৈতিক নেতাদের যোগ থাকে। তবে লালবাজারের তরফে কোনও রং না দেখেই বেআইনি নির্মাণ বন্ধে কড়া অবস্থান নিতে বলা হয়েছে।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোথাও বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ এলে তদন্ত করার পাশাপাশি পুরসভাকেও বিষয়টি জানানো হয়। জানানো হয় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকেও। কিন্তু অভিযোগ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুরসভা বা কাউন্সিলরের তরফে স্থানীয় থানায় কিছু জানানো হয় না। যার ফলে আইনি ব্যবস্থা নিতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে পুলিশ। এ ছাড়া, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বেআইনি নির্মাণের কাজ চলে রাজনৈতিক ‘দাদাদের’ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদতে। এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘নির্মাণটা বৈধ না অবৈধ, সেটা তো পুরসভা বলবে। তাই পুরসভা যদি না জানায়, তা হলে আমরা কী ভাবে ব্যবস্থা নেব?’’ পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘অবৈধ নির্মাণ সংক্রান্ত পুর আইন এমনই যে, পুলিশ চাইলে নিজেরাই শহরের বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে ব্যবস্থা নিতে পারে। সে ক্ষেত্রে পুরসভার অনুমতির‌ও দরকার হয় না।’’

লালবাজারের এক পুলিশকর্তা বলছেন, ‘‘বেআইনি নির্মাণ বন্ধে পুলিশ আইন অনুযায়ী যা যা করণীয়, তা-ই করবে। শহরে দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্য বন্ধ করার ক্ষেত্রে কোনও গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement