প্রতীকী ছবি।
ব্যাঙ্ক প্রতারণার মতো ঘটনায় লাগাম টানতে এবং এই ব্যাপারে সর্বস্তরে সচেতনতা বাড়াতে এ বার সাধারণ নাগরিকের দুয়ারে যাচ্ছে কলকাতা পুলিশ।
লালবাজার সূত্রের খবর, প্রতিনিয়ত বেড়ে চলা ব্যাঙ্ক প্রতারণার মতো অপরাধ ঠেকাতে শহরের বিভিন্ন প্রান্তের বহুতল আবাসনের বাসিন্দাদের সঙ্গে সচেতনতামূলক বৈঠক করছে গোয়েন্দা বিভাগের ব্যাঙ্ক প্রতারণা দমন শাখা এবং স্থানীয় থানা। কী ভাবে ব্যাঙ্ক বা এটিএমে নগদ লেনদেনে প্রতারণা ঠেকানো যায়, তা নিয়ে সচেতন করা হচ্ছে আবাসিকদের। উদ্দেশ্য, এমন ঘটনা পুরোপুরি বন্ধ করা। গোয়েন্দা দফতরের আধিকারিকদের মতে, ব্যাঙ্ক জালিয়াতির মতো ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, নগদ টাকা খরচ করে ফেলে দুষ্কৃতীরা। তাই অভিযুক্ত ধরা পড়লেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে খোয়া যাওয়া টাকা ফেরত আসে না। তাই তদন্তকারীরা মনে করছেন, এই প্রতারণা থেকে মুক্তি পেতে সচেতনতা বাড়ানোই একমাত্র উপায়।
পুলিশ জানিয়েছে, চলতি মাস থেকেই শহরের বিভিন্ন প্রান্তের বহুতল আবাসনগুলির তালিকা তৈরি করে সেখানে গিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে। প্রতি সপ্তাহের শনিবার ওই আবাসনগুলিতে গিয়ে বাসিন্দাদের সচেতনতার পাঠ দিচ্ছেন কলকাতা পুলিশের অফিসারেরা। গত সপ্তাহে বেলেঘাটার রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র রোডের একটি আবাসনে বাসিন্দাদের সচেতন করতে হাজির হয়েছিলেন গোয়েন্দা আধিকারিক এবং পুলিশ অফিসারেরা।
প্রচারে কী কী বলা হচ্ছে?
লালবাজার জানিয়েছে, সরকারি বা বেসরকারি কোনও ব্যাঙ্ক থেকেই ফোন করে কখনও গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাওয়া হয় না। তাই গ্রাহকেরা যাতে কখনও অচেনা কাউকে ফোনে তাঁদের পাসওয়ার্ড, এমপিন অথবা ইউপিআই পিন না দেন, সে ব্যাপারে তাঁদের সতর্ক করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ইউপিআই পিন শুধুমাত্র টাকা পাঠানোর কাজে প্রয়োজন হয়। টাকা পেতে তা লাগে না।
এ ছাড়া কোনও অ্যাপ ডাউনলোড করার আগে সেটি
ঠিক কি না, যাচাই করে নিতেও বলা হচ্ছে গ্রাহকদের। একই সঙ্গে অপরিচিত নম্বর থেকে এসএমএসের মাধ্যমে কোনও লিঙ্ক এলে তাতে ক্লিক করতে বা সেই লিঙ্ক ডাউনলোড করতে বারণ করা হচ্ছে। গোয়েন্দাদের আরও বক্তব্য, ইন্টারনেট থেকে পাওয়া ‘কাস্টমার কেয়ার’ নম্বরে কোনও গ্রাহক যেন ফোন না করেন। একই সঙ্গে পুলিশ অফিসারদের অভিজ্ঞতা, বিভিন্ন রেস্তরাঁর খাবার বা সংস্থার জিনিস বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার নামে প্রতারকেরা সমাজমাধ্যমে ছেয়ে আছে। তাই সেখানে কোনও বিজ্ঞাপন দেখে যাতে কেউ প্রলোভিত না হন, সে ব্যাপারেও বাসিন্দাদের সচেতন করা হচ্ছে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে।
এক পুলিশ অফিসার জানান, আপাতত ইএম বাইপাসের ধারের বিভিন্ন আবাসন এবং বেলেঘাটা-ফুলবাগান এলাকার বহুতলগুলিতে গিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করে সচেতনতার বার্তা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীকালে দক্ষিণ শহরতলির বেহালা ও হরিদেবপুর এলাকার বহুতলগুলির বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। ওই অফিসার বলেন, ‘‘আমরা বাসিন্দাদের
বার বার বলছি, ব্যাঙ্ক বা এটিএমে লেনদেন সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত। তা কখনও কারও সঙ্গে ভাগ
করবেন না।’’