পথপ্রদর্শক: পুরনো ট্যাংরা থানায় রয়েছেন পুলিশকর্মী। —নিজস্ব চিত্র।
সাধারণ মানুষকে থানার নতুন ভবন চিনিয়ে দিতে পুরনো ভবনের সামনে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। রীতিমতো পালা করে চলছে ডিউটি। কখনও কনস্টেবল, কখনও বা সিভিক ভলান্টিয়ারদের দাঁড় করানো হচ্ছে থানার পুরনো ভবনের সামনে। না জেনে কেউ ট্যাংরা থানার পুরনো ভবনে অভিযোগ জানাতে এলে সেই পুলিশকর্মীরাই তাঁকে পাঠিয়ে দিচ্ছেন নতুন ঠিকানায়।
ট্যাংরা থানার নতুন ভবনের উদ্বোধন হয়েছে সপ্তাহখানেক আগে। আগের জরাজীর্ণ ভবন ছেড়ে নতুন পাঁচতলা বহুতলে চলে গিয়েছে সেই থানা। এক প্রোমোটারের কাছ থেকে বাড়িটি কিনে সেটি থানার মতো করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। পুলিশকর্মীদের থাকার জন্য ব্যারাকের পাশাপাশি ওই ভবনে করা হয়েছে ওসি-র বিশ্রামের ঘরও। গত ৭ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে নতুন ভবনের উদ্বোধনের পরেই সেখানে শুরু হয়েছে থানার যাবতীয় কাজ। অভিযোগ নেওয়া থেকে শুরু করে তদন্তের কাজ— সবই হচ্ছে নতুন ভবনে। আধিকারিকেরাও বসছেন সেখানে।
গত কয়েক দশক ধরে গোবিন্দ খটিক রোডে পুরসভার একটি ভবনের একাংশে চলত ট্যাংরা থানার কাজ। কিন্তু বছর দুয়েক আগে জরাজীর্ণ ওই ভবন থেকে থানাটি অন্যত্র সরানোর সিদ্ধান্ত হয়। সেই মতো বছর দেড়েক আগে গোবিন্দ খটিক রোড থেকে কয়েকশো মিটার দূরে পুলিন খটিক রোডে একটি পাঁচতলা ভবন কেনা হয় এক প্রোমোটারের কাছ থেকে। ওই ভবনে থানার কাজ শুরু হলেও পুলিশের আশঙ্কা, বিষয়টি জানা না থাকলে কেউ কেউ পুরনো ভবনে গিয়ে পুলিশের দেখা না পেয়ে ফিরে যেতে পারেন। সেই কারণেই পুরনো থানার সামনে রাখা হচ্ছে পুলিশকর্মীদের। ট্যাংরা থানার এক আধিকারিক জানান, নতুন ভবনের উদ্বোধনের আগে এলাকায় মাইকে প্রচার করা হয়েছিল। থানা স্থানান্তরিত হওয়ার পরেও সেই প্রচার চলছে। এমনকি, বাংলায় ও ইংরেজিতে পুরনো থানার দেওয়ালে নোটিসও টাঙানো হয়েছে। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘আমাদের তরফে সব রকম ভাবে প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু একটি থানা এলাকায় কয়েক লক্ষ মানুষের বসবাস। প্রচার চালিয়ে সকলের কাছে পৌঁছনো সম্ভব নয় ধরে নিয়েই পুরনো থানার সামনে পুলিশকর্মীদের রাখা হয়েছে।’’
থানার নতুন ভবনের উদ্বোধনের পরে এই ক’দিনে পুরনো ভবনে অভিযোগ জানাতে বেশ কয়েক জন গিয়েছেন বলে জানালেন এক পুলিশকর্মী। তাঁদের পথ চিনিয়ে নতুন ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ মোবাইল হারানোর অভিযোগ জানাতে আসছেন, কেউ আবার কয়েক সপ্তাহ আগে দায়ের করা অভিযোগের তদন্তে অগ্রগতি কতটা হল, তা জানতে আসছেন। সবাইকে নতুন ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’
কয়েক সপ্তাহ আগে ভাঙড়ের পাশাপাশি কাশীপুর থানাও কলকাতা পুলিশের অন্তর্ভুক্ত হয়। পুলিশের তরফে নতুন ভবনে উত্তর কাশীপুর থানা চালু করে কাজ শুরু করা হয়েছিল। যদিও মানুষের বিভ্রান্তি কাটাতে কিছু দিন পুরনো ভবনে টেবিল-চেয়ার পেতে পুলিশকর্মীরা বসে ছিলেন বলে স্থানীয়দের দাবি।