আবাসনের এই ফ্ল্যাটেই থাকতেন ওই বৃদ্ধা। —ফাইল চিত্র
যোধপুর পার্কের বৃদ্ধা শ্যামলী ঘোষের খুনের ঘটনায় চার্জশিট পেশ করল পুলিশ। আদালত সূত্রের খবর, চার্জশিটে ১৪১, যোধপুর পার্কের চারতলা ফ্ল্যাটের মালিক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে খুন এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। বাকি দুই অভিযুক্ত, দেবাশিসবাবুর মালি স্বপন মণ্ডল এবং কেয়ারটেকার সঞ্জীব দাসের বিরুদ্ধে খুন, ষড়যন্ত্র ছাড়াও লুটের অভিযোগ রয়েছে। পুলিশি হেফাজত শেষ হওয়ার নির্ধারিত দিনের আগেই বুধবার আদালতে হাজির করানো হয়েছিল দেবাশিসবাবুকে। আদালত তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
চার্জশিটে বলা হয়েছে, ১৪১, যোধপুর পার্কের ঠিকানায় বসবাসকারী শ্যামলীদেবীকে খুন করে তাঁর ফ্ল্যাটটি হাতানোই ছিল দেবাশিসবাবুর মূল উদ্দেশ্য। তাই নিজের মালি স্বপন মণ্ডল এবং কেয়ারটেকার সঞ্জীব দাসকে দিয়ে ওই বৃদ্ধাকে খুন করান তিনি।
গত ২ এপ্রিল যোধপুর পার্কের ওই ঠিকানায় একটি চারতলা বাড়ির তিনতলায় নিজের ফ্ল্যাট থেকে শ্যামলী ঘোষ নামে ওই বৃদ্ধার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ গত ৪ এপ্রিল দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের মালি স্বপন এবং কেয়ারটেকার সঞ্জীবকে গ্রেফতার করে। জেরায় ওই দু’জনই জানান, দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই তাঁরা বৃদ্ধাকে খুন করেছেন। কিন্তু তথ্যপ্রমাণ জোগাড়ের জন্য পুলিশ সেই মুহূর্তে দেবাশিসবাবুকে গ্রেফতার করেনি। অভিযোগের পক্ষে সব কাগজপত্র পাওয়া গিয়েছে জানিয়ে ২৬ জুন পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।
তদন্তকারীদের দাবি, ওই চারতলা ভবনের একতলা এবং দোতলার দু’টি ফ্ল্যাট জোর করে দুই মালিকের থেকে কিনে নিয়েছেন দেবাশিসবাবু। তিনতলার ফ্ল্যাটটি বিক্রি করার জন্য গত কয়েক বছর ধরে তিনি শ্যামলীদেবীকে চাপ দিচ্ছিলেন বলে প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। কিন্তু বৃদ্ধা রাজি না হওয়ায় সেটি হাতাতে এই খুন বলে দাবি তদন্তকারীদের।
এ দিন সরকারি কৌঁসুলি সৌরীন ঘোষাল বলেন, ‘‘পুলিশের তদন্ত শেষ। তাই চার্জশিট জমা করার পাশাপাশি এ দিন দেবাশিসবাবুকে ‘অ্যাডভান্স কোর্ট প্রোডাকশন’ করানো হয়।’’ এ দিন তাঁকে আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। অন্য দিকে, বাকি দুই অভিযুক্ত আগে থেকেই জেল হেফাজতে রয়েছেন।