Kasba Incident

উদ্ধার হওয়া কঙ্কালের অংশ তিন জন মহিলার, কসবা-কাণ্ডে নতুন তথ্য

দিন চারেক আগে কসবার শরৎ ঘোষ গার্ডেন রোডে একটি নির্মীয়মাণ পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে মাথার খুলি-সহ হাড়গোড় উদ্ধার করেছিল পুলিশ। জানা যায়, সম্পত্তিগত বিবাদে কমলা পার্কের ওই বাড়িটি বেশ কয়েক বছর ধরে অর্ধনির্মিত হয়ে পড়ে আছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৪ ০৭:৪৬
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

এক জনের নয়। কসবায় উদ্ধার হওয়া খুলি এবং হাড়গোড় পৃথক তিন জন মহিলার। উদ্ধার হওয়া কঙ্কালের ফরেন্সিক পরীক্ষার পরে এমনই তথ্য সামনে এসেছে। তবে, ওই তিন মহিলার বয়স কত, তাঁদের পরিচয়ই বা কী, তা এখনও পুলিশ জানতে পারেনি। এমনকি, কী ভাবে কঙ্কালের অংশ ওখানে এল, তা নিয়েও নিশ্চিত নন তদন্তকারীরা।

Advertisement

দিন চারেক আগে কসবার শরৎ ঘোষ গার্ডেন রোডে একটি নির্মীয়মাণ পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে মাথার খুলি-সহ হাড়গোড় উদ্ধার করেছিল পুলিশ। জানা যায়, সম্পত্তিগত বিবাদে কমলা পার্কের ওই বাড়িটি বেশ কয়েক বছর ধরে অর্ধনির্মিত হয়ে পড়ে আছে। তাই আগাছায় ভরে যায় বাড়িটি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার বেলার দিকে বাড়ির মালিক পুরসভার কর্মীদের বাড়ি পরিষ্কার করার জন্য ডাকেন। পুরকর্মীরা পরিষ্কার করার সময়ে বেশ কিছু হাড় এবং মাথার খুলির অংশ পড়ে থাকতে দেখেন। তাঁরা কাজ বন্ধ করে বাড়ির মালিককে বিষয়টি জানান। বাড়ির মালিক রাতে কসবা থানায় বিষয়টি জানালে ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাড় উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনাস্থল থেকে একটি মাথার খুলি, বেশ কয়েকটি হাড় উদ্ধার হয়েছিল। তার মধ্যে একটি হাতের হাড়। মাথার খুলির পিছনের দিকের অংশ ভাঙা ছিল। সে দিনই হাড়গুলি ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়। পরীক্ষার ফলাফলে জানা যায়, হাড়গুলি পৃথক তিন জনের। প্রতিটি হাড়ই মহিলাদের বলে জানানো হয়েছে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া হাড় এবং মাথার খুলিতে লাল রং লাগানো ছিল। ঘটনাস্থলের পাশ থেকে বেশ কয়েকটি মদের বোতলও উদ্ধার হয়। ফলে, কী ভাবে সেখানে এগুলি এল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা বেড়েছে। ঘটনাস্থলের কোনও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নেই বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

আশপাশের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে ওখানে কে বা কারা যাতায়াত করত, সেই তথ্য জানতে চাইছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক জন প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা। তবে, গোটা ঘটনার সঙ্গে তন্ত্র সাধনার যোগের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। হাড়ের টুকরোয় লাগানো লাল রং সে দিকেই ইঙ্গিত করছে। পুলিশও তা খতিয়ে দেখছে। ভয় দেখাতে বা অসৎ কোনও উদ্দেশ্যে সেখানে অন্য জায়গা থেকে কঙ্কালের টুকরো আনা হয়েছিল কি না, তা-ও দেখছে পুলিশ।

প্রাথমিক তদন্তে হাড় পরীক্ষা করে এখনও পর্যন্ত খুনের কোনও প্রমাণ মেলেনি বলে জানিয়েছেন এক পুলিশকর্তা। মৃতদের পরিচয়ও জানা যায়নি। খুন করে ওই বাড়িতে ফেলে যাওয়ার বিষয়টি এক প্রকার উড়িয়ে দিয়েছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের যুক্তি, সে ক্ষেত্রে দেহ পচে দুর্গন্ধ বেরিয়ে জানাজানি হত। ঘটনাস্থল থেকে কয়েকশো মিটার দূরে একটি কবরস্থান রয়েছে। সেখান থেকে কোনও ভাবে হাড় এনে রাখা হয়েছে কিনা, তা-ও দেখা হচ্ছে। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘আশপাশের এলাকা থেকে গত কয়েক মাস ধরে নিখোঁজ আছেন, এমন মহিলাদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ শুরু করা হয়েছে। প্রতিটি থানাকেও জানানো হয়েছে। এখনও খুনের কোনও প্রমাণ মেলেনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement