গুরুদাস কলেজ। —ফাইল চিত্র।
কলকাতার গুরুদাস কলেজে র্যাগিংয়ের অভিযোগে কলেজেরই দুই প্রাক্তনীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করল পুলিশ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে র্যাগিং প্রতিরোধী আইনের ৪ নম্বর ধারা যুক্ত করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই বিষয়ে শিয়ালদহের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় আধিকারিক (এসিজেএম)-এর আদালত থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়েছে পুলিশ।
গুরুদাস কলেজের এক পড়ুয়া অভিযোগ করেন যে, তিনি র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন। এই মর্মে তিনি অভিযোগ জানান ইউজিসিকে। তিনি আঙুল তোলেন কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সোহম চক্রবর্তীর দিকে। অভিযোগ পেয়ে কলেজকে পাল্টা মেল করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। তাতে জানানো হয়, এক পড়ুয়ার থেকে র্যাগিংয়ের অভিযোগ পেয়েছে তারা। ওই পড়ুয়াকে চিহ্নিত করে কলেজ কর্তৃপক্ষকে কাউন্সেলিং করানোর পরামর্শ দেয় কমিশন। কমিশন আরও জানায়, ওই পড়ুয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে ইউজিসির নিয়ম মেনে পদক্ষেপ করতে হবে কর্তৃপক্ষকে। ছাত্রের পরিচয় গোপন রাখার কথাও বলা হয়।
তবে ছাত্রের অভিযোগ এবং ইউজিসির মেলের প্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা নিয়ে অবশ্য মুখ খুলতে চাননি কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজের তরফে বলা হয়, ইউজিসির চূড়ান্ত রিপোর্ট পেলে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ জানাবেন। বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের অবশ্য দাবি, সোমবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাতে অভিযোগকারীকে হুমকি দিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়। র্যাগিংয়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ওই ছাত্রনেতা।
এই প্রসঙ্গে কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা পদক্ষেপ করছি। এখনও ইউজিসির চুড়ান্ত রিপোর্ট হাতে পাইনি। আমাদের করা পদক্ষেপ ইউজিসিকে জানিয়েছি। তবে গোটা বিষয়টি গোপন রাখতে চাই। কার বিরুদ্ধে কোন পড়ুয়ার কী অভিযোগ, জানাতে চাই না। ইউজিসির চূড়ান্ত রিপোর্ট হাতে পেলে জানাব।’’ এসএফআইয়ের তরফে অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয়নি। তাই ৮ বছর ধরে কলেজের সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন তৃণমূলের এক নেতা। মূলত তাঁর বিরুদ্ধেই উঠেছে র্যাগিংয়ের অভিযোগ। সোমবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভা ছিল। সেই সভায় অভিযোগকারী পড়ুয়াকে যেতে বাধ্য করা হয় বলেও দাবি এসএফআইয়ের। এসএফআইয়ের আরও দাবি, ওই পড়ুয়াকে হুমকি দেওয়া হয়, সভায় না গেলে পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে।এই ঘটনায় পুলিশের কাছেও অভিযোগ দায়ের করেন পড়ুয়াটি। যাদবপুরের ঘটনা নিয়ে চাপানউতরের আবহেই শহর কলকাতার একটি কলেজ থেকে র্যাগিংয়ের অভিযোগ ওঠা নিয়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে শিক্ষা মহলের একাংশে।