ফাইল চিত্র।
প্রশিক্ষণের সময়ে কেউ মাটিতে বসে পড়ছে। কেউ আবার ছুটতে গেলেই হাঁপিয়ে যাচ্ছে। প্রশিক্ষকের কথা না শোনা বা প্রশিক্ষণের নিয়মকানুন ভুলে যাওয়ার মতো প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে কারও কারও মধ্যে।
কোভিডের কারণে টানা আট মাস প্রশিক্ষণ বন্ধ ছিল। আর সে কারণেই পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে কলকাতা পুলিশের ডগ স্কোয়াডের পুলিশ কুকুরদের মধ্যে এমনই শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে। সম্প্রতি তাদের প্রশিক্ষণ শুরু হওয়ার পরে দেখা যাচ্ছে, সেই পুলিশ কুকুরদের অনেকেই শারীরিক ভাবে ততটা সক্ষম নেই। এমনকি, বহু দিনের অনভ্যাসে প্রশিক্ষণের নিয়মকানুনও ভুলতে শুরু করেছে তারা।
একটানা প্রশিক্ষণ বন্ধ থাকায় লকডাউনের সময়ে ন’টি পুলিশ কুকুর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। সে সময়ে কোনও রকম শারীরচর্চা করার সুযোগ না থাকায় হজমের গণ্ডগোলের কারণে ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল চারটি জার্মান শেফার্ড, চারটি ল্যাব্রাডর ও একটি বেলজিয়ান ম্যালিনয়। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা করে তাদের সুস্থ করে তোলা গেলেও এখনও অনেকেরই শারীরিক দুর্বলতা কাটেনি। যার ফল দেখা যাচ্ছে প্রশিক্ষণের সময়ে।
পিটিএসে কলকাতা পুলিশের ডগ স্কোয়াডে এখন সারমেয়দের মোট সংখ্যা ৪১টি। এদের মধ্যে ২৮টি ল্যাব্রাডর, ১১টি জার্মান শেফার্ড এবং একটি গোল্ডেন রিট্রিভার এবং বিগ্ল প্রজাতির কুকুর রয়েছে।
কলকাতা পুলিশের ডগ স্কোয়াডের চিকিৎসক দেবানন্দ বসাক বলছেন, ‘‘এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রশিক্ষণ বন্ধ থাকায় এই কুকুরগুলি তাদের কার্যক্ষমতা অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছে। নিজের প্রশিক্ষণটাই ভুলে যাচ্ছে। হ্যান্ডলারদের (প্রশিক্ষক) কথাও শুনতে চাইছে না।’’
লালবাজার সূত্রের খবর, করোনার সময়ে পুলিশ ট্রেনিং স্কুলের অনেক কনস্টেবল সংক্রমিত হয়েছিলেন। প্রতিটি পুলিশ কুকুরের দায়িত্ব থাকে দু’জন করে কনস্টেবল পদের পুলিশকর্মীর উপরে। তাই একের পর এক পুলিশকর্মী সংক্রমিত হওয়ায় সে সময়ে দীর্ঘ কয়েক মাস যাবতীয় প্রশিক্ষণ বন্ধ রাখা হয়েছিল। দেবানন্দবাবুর মতে, সেই কারণেই পুলিশ কুকুরেরা অনেক কাজ করতে ভুলে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে জড়তা ভাবও চলে এসেছে। এখন তা কাটানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রশিক্ষণ ছাড়া বসে থাকায় পুলিশ কুকুরদের মানসিকতার পরিবর্তনও হয়েছে। এ ছাড়া তাদের পাকস্থলী বা অন্ত্রের উপরেও এর প্রভাব পড়েছে। তাই এ বার তাদের পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে যাবতীয় চেষ্টা চালানো হচ্ছে।