প্রতীকী ছবি।
ঘটনার পেরে কেটে গিয়েছিল দু’সপ্তাহ। নিউ আলিপুরে বৃদ্ধ খুনের কিনারায় কোনও সূত্র না পেলেও নিজেদের চেষ্টার খামতি রাখেননি তদন্তকারীরা। ফলও মিলেছিল। ঘটনার তিন সপ্তাহের মাথায় খুনের কিনারা করে পুলিশ। হার না-মেনে তদন্তকারীরা চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ায় তাঁদের বাহবা দিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। সোমবার কলকাতা পুলিশের মাসিক ক্রাইম বৈঠকে কমিশনার ওই হার না-মানা মনোভাবের প্রশংসা করে বাহিনীর সকলকে বলেছেন কিনারা না-হওয়া অপরাধের পিছনে সাধ্য মতো চেষ্টা চালিয়ে যেতে।
পুলিশ সূত্রের খবর, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে কলকাতা পুলিশ এলাকায় আটটি খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। এর মধ্যে বাঁশদ্রোণী-সহ বিভিন্ন খুনের কিনারা হলেও সরশুনা এবং কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার দু’টি খুনের মূল অভিযুক্তেরা এখনও ধরা পড়েনি। এ দিনের ক্রাইম বৈঠকে কমিশনার ওই দুই ঘটনার তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে জানতে চান। সেই সঙ্গেই অভিযুক্তেরা যাতে দ্রুত ধরা পড়ে, তা দেখার নির্দেশ তিনি দিয়েছেন দুই থানার ওসি এবং সংশ্লিষ্ট দুই ডেপুটি কমিশনারকে।
গত ৭ সেপ্টেম্বর কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার বাগডোহা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় দিলীপ প্রামাণিক নামে এক যুবককে উদ্ধার করে পুলিশ। হাসপাতালে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পারে, পরিচিত এক যুবকের গুলিতেই খুন হয়েছেন দিলীপ। কিন্তু ঘটনার এক মাস কেটে গেলেও এখনও অধরা ওই যুবক।
অন্য দিকে, দুর্গাপুজোর সপ্তমীর রাতে সরশুনা মেন রোডে একটি বাড়ি থেকে অনুপমা ঠাকুর নামে এক মহিলার দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানায়, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে ওই মহিলাকে। ঘটনার পর থেকেই তাঁর সৎ ছেলে পলাতক। তদন্তকারীদের দাবি, ওই যুবকই এই খুনের ঘটনায় যুক্ত।
লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘এ দিনের বৈঠকে কমিশনার সকলকে অপরাধের ঘটনায় বিভিন্ন দিক থেকে তদন্ত চালিয়ে যেতে বলেছেন। সিসিটিভি এবং মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে কোনও ঘটনার কিনারা না হলে অন্য দিকগুলি খতিয়ে দেখার কথাও বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে সিপি লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের সঙ্গে সমন্বয়ও বজায় রাখতে বলেছেন।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, খুব তাড়াতাড়ি পুলিশ আধিকারিকদের হাতে নতুন একটি অ্যাপ তুলে দিচ্ছে লালবাজার। কোন এলাকায় সিসিটিভি রয়েছে বা কোথায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা থাকেন, এই অ্যাপের মাধ্যমে তা জানতে পারবেন থানার আধিকারিকেরা। পাশাপাশি, শহরের কোথাও কোনও অপরাধ হলে তার কাছাকাছি কোনও সিসিটিভি আছে কি না, তা-ও জানা যাবে। সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (৪) এই অ্যাপ নিয়ে পুলিশ আধিকারিকদের অবহিত করেন।