Kolkata Police Commissioner

Vineet Goyal: রাস্তায় জরিমানার দৃশ্য রেকর্ড করে রাখার নির্দেশ পুলিশকে

লালবাজার সূত্রের খবর, ট্র্যাফিক পুলিশের কাছে বর্তমানে ১৭০০টি ‘বডি ক্যামেরা’ রয়েছে। যা প্রত্যেক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীকে বাধ্যতামূলক ভাবে পরতে হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২২ ০৫:২৭
Share:

ফাইল চিত্র।

মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাতে গিয়ে ট্র্যাফিক পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন এক দম্পতি। চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স চাইতেই পুলিশের সঙ্গে বচসা জুড়ে দেন তাঁরা। পরে সেই দম্পতি ট্র্যাফিক
সার্জেন্টের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে উচ্চপদস্থ কর্তাদের দ্বারস্থ হন।

Advertisement

আবার ট্র্যাফিক আইন ভাঙার অভিযোগে এক চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন এক জন পুলিশকর্মী। কিন্তু পরে ওই চালক দাবি করেন, তিনি মোটেই ট্র্যাফিক আইন অমান্য করেননি। পুলিশই অন্যায্য ভাবে জরিমানা করেছে। দু’টি ক্ষেত্রেই ট্র্যাফিক সার্জেন্টরা পুরো ঘটনাটি নিজেদের শরীরের সঙ্গে থাকা ক্যামেরায় রেকর্ড করে রেখেছিলেন। যা দেখার পরে তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খারিজ হয়ে যায়।

লালবাজার জানিয়েছে, মত্ত অবস্থায় স্টিয়ারিংয়ে বসা অথবা ট্র্যাফিক আইন ভাঙা চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সময়ে পুলিশকর্মীরা যাতে তা মোবাইলে বা শরীরে লাগানো ক্যামেরায় রেকর্ড করে রাখেন, সে ব্যাপারে ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকে ফের নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্র্যাফিক)। সেই সঙ্গে ওই ফুটেজ কিছু দিন সংরক্ষণ করে রাখতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই ফুটেজ বা ছবি কত দিন রেখে দিতে হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনও নির্দেশিকা না-থাকলেও একাধিক ট্র্যাফিক গার্ডের তরফে জানানো হয়েছে, পুলিশকর্মীরা নিজেদের স্বার্থেই প্রতিটি ভিডিয়ো অনেক দিন পর্যন্ত রেখে দেন।

Advertisement

ট্র্যাফিক আইন লঙ্ঘন বা জরিমানা করার মতো ঘটনার ভিডিয়ো রেকর্ডিং হঠাৎ এতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল কেন? এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘অনেকেই ধরা পড়লে ব্যক্তিগত আক্রোশের বশে মিথ্যা অভিযোগ করেন অফিসারদের বিরুদ্ধে। আবার মত্ত অবস্থায় ধরা পড়া অনেকেই নিজেদের প্রভাবশালী বলে দাবি করে যা ইচ্ছে তা-ই বলতে থাকেন। এই ধরনের ঘটনা ক্যামেরায় তোলা থাকলে পরে পুলিশকর্মীদের ভুলত্রুটি যেমন ধরা পড়বে, তেমনই ভুয়ো অভিযোগ এলে তা যাচাই করেও দেখা যাবে।’’

লালবাজার সূত্রের খবর, ট্র্যাফিক পুলিশের কাছে বর্তমানে ১৭০০টি ‘বডি ক্যামেরা’ রয়েছে। যা প্রত্যেক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীকে বাধ্যতামূলক ভাবে পরতে হয়। কোনও ট্র্যাফিক আইনভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সময়ে গোটা ঘটনাটি রেকর্ড করে রাখাটাও এখন বাধ্যতামূলক হয়েছে। কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে সেখানে যদি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে পুলিশের বাদানুবাদ শুরু হয়, তা হলে সেই ঘটনারও ভিডিয়ো তুলে রাখতে বলা হয়েছে। বডি ক্যামেরা কোনও কারণে কাজ না করলে মোবাইলেও তুলে রাখা যাবে তা।

উত্তর কলকাতায় কর্মরত ট্র্যাফিক পুলিশের এক আধিকারিক জানালেন, ট্র্যাফিক আইন ভেঙে ধরা পড়লে এক শ্রেণির মানুষ পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ এনে পাল্টা চাপ তৈরির চেষ্টা করেন। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশও বুঝতে পারে না, কী করণীয়। তাই ওই সমস্ত ঘটনার ভিডিয়ো থাকলে সত্যিটা জানা খুব সহজ হবে।

অন্য দিকে, কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, গত শনি ও রবিবার অভিযান চালিয়ে ১৭১ জন মত্ত চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শুধু শনিবার রাতেই জরিমানা ও ব্যবস্থা নেওয়া
হয়েছে ১০০ জনের বিরুদ্ধে। যা গত পাঁচ বছরে এক দিনের হিসাবে সর্বোচ্চ বলে দাবি লালবাজারের।

পুলিশ জানিয়েছে, শহরের রাস্তায় মত্ত চালকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। সেই মতো অভিযান চলছে। এর জন্য আরও ৫০টি ব্রেথ
অ্যানালাইজ়ার কিনতে চায় লালবাজার। এ বিষয়ে পরিবহণ দফতরের কাছে গত মাসে প্রস্তাব দিয়েছে তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement