প্রতীকী ছবি।
দুর্গাপুজো আসতে বাকি প্রায় সাড়ে তিন মাস। করোনা পরিস্থিতি আয়ত্তের মধ্যে থাকলে দু’বছর পরে এ বার বাধাহীন ভাবে পুজোর আয়োজন করা যাবে। আর তা মাথায় রেখে এর মধ্যেই এই সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিল লালবাজার।
পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবারই ডিভিশনাল ডেপুটি কমিশনারদের মাধ্যমে প্রতিটি থানায় এই মর্মে লালবাজারের তরফে বার্তা পাঠানো হয়েছে। সেই বার্তায় প্রতিমা কত উচ্চতার হবে, তা স্পষ্ট ভাবে বলে দেওয়া হয়েছে। প্রতিমা শিল্পী এবং পুজোর উদ্যোক্তাদের তা জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে থানাগুলিকে। একই সঙ্গে গত বছর রাজ্য সরকার পুজো কমিটিগুলিকে যে ৫০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছিল, সেই টাকা কোন খাতে খরচ হয়েছে, তার ‘ইউটিলাইজ়েশন সার্টিফিকেট’ জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত বছর ওই অনুদান দেওয়া নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে একটি মামলা হয়েছিল। সেখানে আদালত ওই টাকা কোন কোন খাতে খরচ করা যেতে পারে, তার নির্দেশ দিয়েছিল। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, পুজোর উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে ওই ‘ইউটিলাইজ়েশন সার্টিফিকেট’ মিললে তা লালবাজারে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার লালবাজারের তরফে পুজোর উদ্যোক্তা ও প্রতিমা শিল্পীদের জন্য পৃথক দু’টি নির্দেশ জারি করা হয়েছে। তার মূল বক্তব্য হল, বাগবাজার থেকে গোয়ালিয়র ঘাটের মধ্যবর্তী যে কোনও ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দিতে হলে সার্কুলার রেলের ওভারহেড তার পেরিয়ে যেতে হবে। ওই তারের উচ্চতা মাটি থেকে ১৭ ফুট। তাই প্রতিমার উচ্চতা রাখতে হবে ১০-১১ ফুটের মধ্যে।
এক পুলিশকর্তা জানান, এই উচ্চতা বেঁধে দেওয়ার বিষয়টি নতুন নয়। কিন্তু তা যাতে প্রথম থেকেই শিল্পী ও উদ্যোক্তারা মেনে চলেন, তাই ওই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। উদ্যোক্তাদের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখে পুজোর প্রস্তুতি শুরু করতে বলা হয়েছে থানাগুলিকে। মধ্য কলকাতার একটি থানা সূত্রের খবর, এলাকার উদ্যোক্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে তারা। যাতে শুরু থেকেই দু’পক্ষের মধ্যে সমন্বয় থাকে।
পুলিশ এত আগে পুজোর প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন? সূত্রের খবর, সাধারণত পুলিশ অগস্ট থেকে পুজোর প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। এ বার সাড়ে তিন মাস আগেই তা শুরু হল। প্রথমে প্রতিমা সংক্রান্ত নির্দেশ জারি করা হল। এর পরে ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে কোথায় পার্কিং হবে বা কোন রাস্তা মেরামত করতে হবে, সে বিষয়ে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হবে। তবে লালবাজারের একটি অংশের আশঙ্কা, গত দু’বছর বিভিন্ন বিধিনিষেধ থাকায় একাধিক পুজো কমিটির প্রস্তুতি ব্যাহত হয়েছিল। এ বার করোনা পরিস্থিতি এখনও পর্যন্ত আয়ত্তে রয়েছে। সেটা ধরে নিয়েই বলা যায়, পুজো কমিটিগুলি দু’বছরের খামতি পুষিয়ে নিতে চাইবে। কিছু পুজো কমিটি সেই লক্ষ্যে এগোচ্ছেও। তবে সরকারি নির্দেশ যাতে প্রথম থেকেই মেনে চলা হয়, তার জন্য আগেই নির্দেশিকা জারি করা হল।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।