প্রোমোটারের অফিসে হামলার সেই দৃশ্য। —ফাইল চিত্র।
শাসকদল তৃণমূলের বিধায়ক তথা কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের নামে এলাকায় তোলাবাজি চালাচ্ছিল একদল দুষ্কৃতী। তোলা না দেওয়ায় এক প্রোমোটারকে তাঁর অফিসে ঢুকে মারধরও করে তারা। ওই ঘটনার একটি ভাইরাল ভিডিয়ো (ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) ছড়িয়ে পড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঘটনার মূল অভিযুক্ত-সহ চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
পুলিশের কাছে ওই প্রোমোটার অভিযোগ করেছিলেন অভিজিৎ মণ্ডল ওরফে রানা নামে এক যুবকের নেতৃত্বেই ওই প্রোমোটারের অফিসে হামলা চলায় দুষ্কৃতীরা। নিজেকে তৃণমূল কর্মী এবং ডেপুটি মেয়রের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলেও পরিচয় দেয় তারা। শনিবার ঘটনাটির ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই অভিজিৎকে খুঁজছিল পুলিশ। অবশেষে রবিবার অভিজিৎ-সহ তার আরও তিন সাগরেদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের নাম সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশাল দেব এবং মনু পাণ্ডে। এই ঘটনায় আগে আরও জিতেনকুমার পাল এবং কনওয়ালজিৎ শী নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। রবিবারের পর কাশীপুরের ঘটনায় মোট ধৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ছয়।
কাশীপুর থানা এলাকার সিঁথির মোড়ের কাছে ওই প্রোমোটারের অফিস। অভিযোগ, শুক্রবার রাতে আচমকাই সেই অফিসে এসে হাজির হন কয়েক জন। দাবি করেন, এলাকায় যদি ব্যবসা করতে হয়, তবে পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে হবে। এ নিয়ে দু’পক্ষের বচসা বাধে। চলে কথা কাটাকাটিও। অভিযোগ, প্রোমোটার ওই টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাঁর উপর চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। মারধর করে। তার পরে অফিসের মধ্যেই ভাঙচুর চালায় দুষ্কৃতীরা। অফিসে থাকা লাখখানেকের বেশি টাকা নিয়ে চম্পট দেয় বলেও অভিযোগ।
খবর পেয়ে সিঁথির মোড়ের ওই অফিসে আসেন আক্রান্ত প্রোমোটারের দাদা তাপস মজুমদার। তিনিই ভাইকে উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান। আপাতত ওই প্রোমোটারের চিকিৎসা চলছে সেখানেই। শুক্রবার রাতেই বিষয়টি কাশীপুর থানায় রিপোর্ট করেন তাপস। শনিবার সকালে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সূত্রে খবর, তাপস তাঁর অভিযোগে লিখেছেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা তৃণমূল করত।’’ আক্রান্ত ওই প্রোমোটারও অভিযোগ করেছেন, দুষ্কৃতীরা নিজেদের কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীনের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করেছিল।
যদিও অতীনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে তাঁর কিছুই জানা নেই। তাঁর কথায়, ‘‘রানা বলে যাঁর কথা বলা হচ্ছে তাঁকে আমি চিনি। শিক্ষিত বলেই জানতাম। তবে তাঁর সঙ্গে আমার বেশি দিনের যোগাযোগ নয়। ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানা নেই আমার। পুলিশকে বলব অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে। তবে আমি বিষয়টি তৃণমূল নেতৃত্বকে জানাব। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করা হবে।’’