অপরাধ জগৎ নিয়ে তৈরি হওয়া বলিউডের কোনও ছবির দৃশ্যের যেন পুনরাবৃত্তি হল শুক্রবার সন্ধ্যায় সোনাগাছিতে। যখন গুন্ডা দমন শাখার অফিসারদের হাতে ধরা পড়ে গেল পূর্ব ও মধ্য কলকাতার কুখ্যাত দুষ্কৃতী সেলিম।
প্রথমকে সেলিমের দলেরই এক জনকে হাত করে তাকে দিয়ে ওই সমাজবিরোধীকে ডাকান গোয়েন্দারা। তাঁরা জানতেন, সেলিম একটি ঘরে লুকিয়ে আছে। কিন্তু কোন ঘরে, সেই খবর তাঁদের কাছে ছিল না। আবার অভিজ্ঞতা থেকে তাঁরা জানতেন, এ সব ক্ষেত্রে ধুরন্ধর সেলিম আগে কাউকে বাইরে পাঠিয়ে পরিস্থিতি যাচাই করে নেয়। সে সবুজ সঙ্কেত দিলে তবেই সেলিম বাইরে বেরোয়।
সেই মতো গুন্ডা দমন শাখার অফিসাররা সাধারণ পোশাকে তো বটেই, এক সঙ্গেও ছিলেন না। যাতে সন্দেহ না হয়। প্রথমে এক অফিসার সেলিমের দলের ওই সদস্যকে দিয়ে খবর পাঠান, এক জন জরুরি প্রয়োজনে দেখা করতে চায়। সেলিম তখন দলের অন্য এক জনকে বাইরে পাঠায়। সে বেরিয়ে ওই গোয়েন্দা অফিসারকে, মানে এক জনকেই দেখে। কাজেই, সেলিমকে সে ‘অল ক্লিয়ার’ সঙ্কেত পাঠায়।
আরও পড়ুন- ওষুধ থেকে স্যালাইন, গড়াগড়ি মেঝেতেই
ততক্ষণে ওই জায়গায় পৌঁছে গিয়েছেন অন্য অফিসাররাও। সন্ধ্যার অন্ধকার নেমেছে। সেই সুযোগও নেন গোয়েন্দারা। সেলিম বেরোতেই তাকে ঘিরে ফেলে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, নারকেলডাঙার সেলিম পূর্ব ও মধ্য কলকাতার এক কুখ্যাত দুষ্কৃতী। এখনও পর্যন্ত খুনের চেষ্টার সাতটি, অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে রুজু হওয়া আটটি -সহ মোট ২৮টি মামলা তার বিরুদ্ধে পুলিশের খাতায় ঝুলছে।
২০১৫-র অগস্টে এন্টালিতে দিনের আলোয় গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল সেলিমের বিরুদ্ধে। তার পর থেকেই সে পালিয়ে বে়ড়াচ্ছিল। ২০১২ সালে ভিন রাজ্য থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ২০১৪ সালে নারকেলডাঙায় প্রকাশ্যে গুড্ডু নামের এক যুবককে গুলি করে সেলিম। তারপরে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। জামিনে মুক্তি পেয়ে গত বছরের অগস্টে ফের এন্টালিতে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এ বার এন্টালির ওই মামলাতেই তাকে গ্রেফতার করা হল বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন।