—প্রতীকী চিত্র।
আনন্দপুর-কাণ্ডে আরও এক জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম শুকদেব সুকুমার সূত্রধর। মুম্বই থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতারির সংখ্যা দাঁড়াল আট।
পুলিশ সূত্রের খবর, বছর ঊনচল্লিশের শুকদেব মুম্বইয়ের জুহুর বাসিন্দা। শুক্রবার রাতে সেখান থেকেই তাকে ধরে কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখা। পুলিশ জানায়, বেহালার যুবক ও তাঁর গাড়িচালককে অপহরণ করে নেতাজিনগরের যে ফ্ল্যাটে আটকে রাখা হয়েছিল, সেটি শুকদেব নিজের নামে ভাড়া নিয়েছিল। তার পরে কয়েক বার সেখানে থেকেওছিল সে। অপহরণের সময়ে সে ফ্ল্যাটেই ছিল বলে পুলিশের দাবি। পুলিশের দাবি, মূল অভিযুক্ত বিক্রম দাসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গোটা পরিকল্পনা করে শুকদেব।
গত ৪ ডিসেম্বর রাতে আনন্দপুর থানায় ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এক তরুণী। সম্পর্ক ‘জোড়া’ লাগানোর নাম করে ডেকে এনে গাড়ির ভিতরে বেহুঁশ করে তাঁকে গণধর্ষণ করা হয় বলে বেহালার বাসিন্দা এক যুবক ও তাঁর গাড়িচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি। যদিও তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, অভিযুক্ত এবং তাঁর গাড়িচালককে অপহরণ করার পাল্টা অভিযোগ দায়ের হয়েছে নেতাজিনগর থানায়। এই ঘটনায় আগেই সাত জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। হায়দরাবাদ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে মূল অভিযুক্ত বিক্রম দাসকেও। পুলিশ তদন্তে জেনেছে, বেহালার যুবককে পরিকল্পনা করে ডেকে এনে ফ্ল্যাটে আটকে রেখে তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলার পরিকল্পনা করেছিল বিক্রম। ওই যুবকের থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতানোই ছিল মূল লক্ষ্য। ধৃতদের জেরা করে শুকদেবের নাম পান তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রের খবর, বিক্রমের সঙ্গে অন্যতম চক্রী ছিল শুকদেব। বেহালার যুবক এবং তাঁর গাড়িচালককে অপহরণ করার পরে আটকে রাখতে মারধরও করেছিল সে। মূলত মোটা অঙ্কের টাকার ভাগ নেওয়াই তার উদ্দেশ্য ছিল বলে মনে করছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ওই ফ্ল্যাটটি সে ভাড়ায় নিয়েছিল ১ ডিসেম্বর। অপহরণের পরে আটকে রাখতেই সেটি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এক তদন্তকারী পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘গভীর এই ষড়যন্ত্রের অন্যতম মাথা শুকদেব। শুধু টাকা হাতানোই মূল উদ্দেশ্য ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃতদের একসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলবে।’’
ধৃতকে শনিবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। এ দিন সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল বলেন, ‘‘ধৃত মূল চক্রীর অন্যতম সঙ্গী।তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। সেই মতো বিচারকের কাছে পুলিশি হেফাজতের আবেদন করা হয়।’’