প্রতীকী ছবি।
শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সহায়ক-সহায়িকা পদে নিয়োগের ভুয়ো বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে ৮২ হাজারেরও বেশি পরীক্ষার্থীকে আর্থিক প্রতারণা করার অভিযোগে সোমবার বনগাঁ থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে বিধাননগর সাইবার থানার পুলিশ। ধৃতের নাম রাজা মিত্র (৪০)। মঙ্গলবার তাকে বিধাননগর আদালতে তোলা হলে ছয় দিনের পুলিশি হেফাজত হয়।
পুলিশ জানায়, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে কেন্দ্রের একটি মন্ত্রকের লোগো ব্যবহার করে একটি বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, ই-ডিজিটাল ইন্ডিয়া কর্পোরেশন ও সেন্ট্রাল জুনিয়র স্কুলে মোট ১৪,২৬৫টি পদে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সহায়ক-সহায়িকা নিয়োগ করা হবে। বিজ্ঞাপনে দু’টি ওয়েবসাইট ও একটি টোল ফ্রি নম্বরও দেওয়া হয়। এর পরে ৮২,৪১৫ জন সেই বিজ্ঞাপনে সাড়া দেন। শিক্ষক পদে রেজিস্ট্রেশন ফি হিসেবে ১৮০ টাকা এবং সহায়ক পদে ১৩০ টাকা করে নেওয়া হয়।
এর পরে ২০১৮ সালের গোড়ায় এক মহিলা বিধাননগর সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশের দাবি, তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, রেজিস্ট্রেশন ফি হিসেবে মোট ১ কোটি ৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জমা পড়েছিল একটি ট্রাস্টের ৯টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। সেই ট্রাস্টের তরফেই চাকরির বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। তদন্তে নেমে পুলিশ ৯টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করে। তাতে ৮১ লক্ষ ৪৮ হাজার ২২২ টাকা ছিল। দু’টি ওয়েবসাইটও বন্ধ করে দেওয়া হয়। পুলিশের দাবি, এর পরে ধৃত রাজা মিত্র আগাম জামিনের জন্য কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেন। কিন্তু তা খারিজ হয়ে যায়। তার পর থেকে ধৃতের খোঁজ মিলছিল না। বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার রাতে বনগাঁ থেকে রাজাকে গ্রেফতার করা হয়।
তদন্তকারীদের একাংশের অনুমান, ঘটনার নেপথ্যে মূল চক্রীই ধরা পড়েছে। কিন্তু আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে। পুলিশের দাবি, স্বল্প পরিমাণ টাকা বেশি সংখ্যক লোকের থেকে তোলা হবে। এমন ছক কষেই প্রতারণা ঘটানো হয়েছে। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘সচেতনতা প্রচারের পরেও মানুষ সজাগ হচ্ছেন না। বারবার প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। চাকরির বিজ্ঞাপন দেখলে আগে তার সম্পর্কে খোঁজ করা প্রয়োজন।’’