আবাসনের এই ফ্ল্যাটেই থাকতেন ওই বৃদ্ধা। —ফাইল চিত্র
ডায়েরির সূত্র ধরেই যোধপুর পার্কে বৃদ্ধা খুনের কিনারা করল কলকাতা পুলিশ। দেবাশিস মুখোপাধ্যায় নামে ওই আবাসনেরই এক বাসিন্দাকে এই ঘটনায় গ্রেফতার করেছে লেক গার্ডেন্স থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, দেবাশিস ওই আবাসনের চার তলায় থাকেন। এই ঘটনায় আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল আবাসনের মালি ও নিরাপত্তারক্ষীকে। তাদের জেরা করে এবং ডায়েরির লেখার সূত্র ধরেই দেবাশিসের খোঁজ পায় পুলিশ।
গত এপ্রিলে যোধপুর পার্কের অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাটের ভিতরে নৃশংস ভাবে খুন হন বৃদ্ধা শ্যামলী ঘোষ (৭৫)। তাঁর এই ফ্ল্যাট কেউ হাতাতে চাইছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে ডায়েরিতে লিখেছিলেন। এমনকি তিনি খুন হতে পারেন, সেই সম্ভাবনার কথাও ডায়েরিতে লিখে রেখেছিলেন। শ্যামলী দেবী খুন হওয়ার পরই ডায়েরিটি পুলিশের হাতে আসে। সেই ডায়েরির সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ঘটনার পর পরই খুনের অভিযোগে আবাসনের মালি ও নিরাপত্তারক্ষীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কিন্তু এই ঘটনার পিছনে অন্য কারও হাত রয়েছে বলে সন্দেহ করছিল পুলিশ।
ধৃত দু’জনকেই জেরা করে দেবাশিসের খোঁজ পায় পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে খবর, দেবাশিস বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাট দখল করার চেষ্টা করছিলেন। কয়েক জন আবাসিককে ভয় দেখিয়ে তাঁদের ফ্ল্যাট কব্জাও করেছিলেন। তবে তাঁর বেশি নজর ছিল শ্যামলী দেবীর বিশাল ফ্ল্যাটটির উপর। আবাসনের তিন হাজার স্কোয়ার ফুটের একটি ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন তিনি। বেশ শক্ত সামর্থও ছিলেন। নিজেই বাড়ির সব কাজ করতেন। বাইরে কোনও কাজের প্রয়োজন হলে আবাসনের মালি ও নিরাপত্তারক্ষীকে ডেকে নিতেন। নানা ভাবে ভয় দেখিয়ে, শাসিয়ে ফ্ল্যাটটা হাতানোর চেষ্টা করেন দেবাশিস। কিন্তু ব্যর্থ হন। তখন মালি ও নিরাপত্তারক্ষীকে মোটা টাকার লোভ দেখান। ঘটনার দিন শ্যামলী দেবীকে ফুল দেওয়ার অছিলায় ঘরে ঢোকে ওই দু’জন। প্রথমে সাঁড়াশি দিয়ে বৃদ্ধার মাথায় আঘাত করে তারা। তার পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে বৃদ্ধারই শাড়ি গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে এবং বালিশ চাপা দিয়ে মারা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ধাক্কা মেরে পালাল লরি, মৃত্যু খালাসির
আরও পড়ুন: নিজামের সাড়ে তিন কোটি পাউন্ড কার? কোর্টের দ্বারস্থ ভারত-পাক