প্রতীকী ছবি।
অভিযোগটা প্রতারণার। মূলে সেই বিট কয়েন। অভিযুক্তদের বাগে আনতে বিট কয়েন কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন তদন্তকারীরা। একে একে চক্রের সকলের সঙ্গে যোগাযোগও করেন তাঁরা। কিন্তু তার পরেও কাউকে ধরা যাচ্ছিল না।
শেষমেশ অভিযুক্তদের বিশ্বাস অর্জন করতে তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করা হয় বলে পুলিশ সূত্রের খবর। এর পরেই ফাঁদে পা দেয় প্রতারকেরা। সোমবার তাদের সল্টলেকের একটি জায়গায় ডাকা হয়। বিট কয়েন দেওয়ার বদলে টাকা নেওয়ার জন্য অভিযুক্তেরা হাজির হতেই ছ’জনকে হাতেনাতে পাকড়াও করে পুলিশ। ধৃতদের নাম ঘনশ্যাম মিস্ত্রি ওরফে রূপেশ, লক্ষ্মণ মণ্ডল, তাপস বিশ্বাস, স্নেহাশিস মুখোপাধ্যায় ওরফে আশিস রায় ওরফে অমিত জৈন, অশোক রায়, অবনীশ মজুমদার ওরফে জিগনেশ, শিবশঙ্কর দাস ওরফে রাহুল দাস এবং বুলবুল শেখ। তারা সোনারপুর, হৃদয়পুর, মধ্যমগ্রাম ও বারাসতের বাসিন্দা।
প্রসঙ্গত, দিল্লির বিবেকপুরীর ব্যবসায়ী শান্তনু শর্মা ১১ জানুয়ারি বিধাননগর দক্ষিণ থানায় ওই প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি জানান, ১০ জানুয়ারি তিনি ব্যবসায়িক লেনদেন সংক্রান্ত একটি বিষয়ে দুই ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনায় ব্যস্ত ছিলেন। তখনই লেনদেনের নামে তাঁর কাছ থেকে ৬১ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা নিয়ে নেওয়া হয়।
শান্তনুবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ওই ব্যক্তি বিট কয়েন কেনার জন্য কলকাতায় এসেছিলেন। কিন্তু টাকা নেওয়ার পরেও তাঁকে প্রতিশ্রুতি মতো কিছুই দেওয়া হয়নি। এর পরে প্রথমে রাহুল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং ফাঁদ পেতে গোটা চক্রের হদিস পান তদন্তকারীরা।
পুলিশ জানায়, চক্রের পাণ্ডা অশোক রায়। ধৃতদের মধ্যে নির্দিষ্ট এক ব্যক্তি টাকা সংগ্রহের কাজ করতেন। তাই সকলকে এক বারে গ্রেফতার করা সহজ ছিল না। বিধাননগর পুলিশের এক কর্তা জানান, যে কৌশলে প্রতারণা করা হচ্ছিল তার মধ্যে অভিনবত্ব রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে আরও বেশ কিছু অপরাধে এই চক্রের জড়িত থাকার সূত্র মিলেছে। সেগুলি যাচাই করা হচ্ছে।
সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অবিলম্বে এই ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেট নিয়ে প্রশাসনের পদক্ষেপ করা উচিত। না হলে এই ধরনের ঘটনার প্রবণতা বাড়বে।’’