Kali Puja 2020

বাজির সঙ্গে মণ্ডপে ভিড় ঠেকানোর পরীক্ষাও পুলিশের

সেই কারণে থানাগুলিকে লালবাজারের আরও নির্দেশ, বাজি বিক্রি বা ফাটানো হলে সেই অভিযোগে মামলা রুজু করতে হবে।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২০ ০৩:৪৪
Share:

ফাইল চিত্র।

‘পরীক্ষার্থী’র সংখ্যা খুব কম নয়। পরীক্ষাও বেশ কঠিন। ফলে পরীক্ষকের কতটা কড়া নজর থাকবে এবং পরীক্ষার ফল কী হবে, আপাতত সে দিকেই তাকিয়ে শহরবাসী। পরীক্ষার্থী অর্থাৎ বাজি ব্যবসায়ী এবং শহরের বিভিন্ন বড় পুজোমণ্ডপ। পরীক্ষক পুলিশ। এক দিকে সব ধরনের বাজি বিক্রি ঠেকিয়ে নাগরিকদের দূষণহীন কালীপুজো উপহার দেওয়া, অন্য দিকে আমহার্স্ট স্ট্রিট, জানবাজার বা চেতলার মতো বড় পুজোগুলিতে ভিড় নিয়ন্ত্রণ। আসন্ন কালীপুজো এবং দীপাবলিতে এই দুই পরীক্ষার সামনে লালবাজার। পুলিশ সূত্রের খবর, জোড়া পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গে উতরোতে আটঘাট বেঁধে তৈরি হচ্ছে বাহিনী। বাজি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর করতে সোমবার থেকেই প্রচারাভিযান শুরু করেছে বিভিন্ন থানা।

Advertisement

প্রতি বছরই কালীপুজো এবং দীপাবলির রাতে শব্দবাজির সঙ্গে কার্যত লুকোচুরি চলে পুলিশের। এ বার সব ধরনের বাজি পোড়ানো এবং ফাটানোর উপরে রাশ টেনেছে আদালত। পরিবেশকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ মনে করছেন, এতেই কঠিন পরীক্ষার সামনে পড়েছে পুলিশ। তাই আদালতের নির্দেশ কঠোর ভাবে পালন করার জন্য লালবাজারের তরফে থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, নির্দেশে বলা হয়েছে, থানাগুলি তাদের মতো করে এলাকায় প্রচার চালাবে। বৈঠক করতে হবে বিভিন্ন আবাসন সমিতির সঙ্গে। কারণ, প্রতি বছর শুধু শব্দবাজি নিষিদ্ধ থাকলেও বিভিন্ন বহুতল থেকে সেগুলি ফাটানোর অভিযোগ আসে। এ বার শব্দবাজির পাশাপাশি আতশবাজিও নিষিদ্ধ। ফলে আবাসনের বাসিন্দারা যাতে বাজি না ফাটান, তা নিয়ে তাঁদের সতর্ক করা হচ্ছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিখ্যাত ব্যক্তিদের নিয়ে এলাকায় ঘুরে বাজির বিরুদ্ধে প্রচার চালানোর পরিকল্পনাও নিয়েছে বেশ কিছু থানা।

Advertisement

আরও পডুন: ‘বারণ সত্ত্বেও যাঁরা বাজি ফাটাবেন, তাঁরা তো গণশত্রু’​

পরিবেশকর্মীদের বক্তব্য, হাইকোর্টের নির্দেশ না মানলে আদালত অবমাননার দায়ে পড়বে পুলিশই। বাজি ফাটলে তা দূর থেকে শোনা যাবে। আবার, আতশবাজির আলো এবং ধোঁয়াও দূর থেকে সকলে দেখতে পাবেন। ফলে বাজি ফাটেনি বলে ধামাচাপা দেওয়া সম্ভব হবে না পুলিশের পক্ষে। তাই সব ধরনের বাজি রোখাই এ বার তাদের কাছে বড় পরীক্ষা। এমনকি কালীপুজোর আগে বা পরে যাতে কোনও ধরনের বাজি না ফাটে, নজরে রাখতে হবে সেটাও।

সেই কারণে থানাগুলিকে লালবাজারের আরও নির্দেশ, বাজি বিক্রি বা ফাটানো হলে সেই অভিযোগে মামলা রুজু করতে হবে। পুলিশের একাংশ মনে করছে, বাজি পোড়ানো বন্ধ করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা হতে পারে, তা অনুমান করেই এই সিদ্ধান্ত। এ ছাড়া, পরবর্তী সময়ে আদালতে সেই মামলা উঠলে পুলিশ কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, তা-ও জানিয়ে দিতে পারবে প্রশাসন।

লালবাজারের এক কর্তা জানান, বাজির দূষণের ক্ষতিকারক দিক নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য লিফলেট বিলি, পোস্টার সাঁটানো থেকে শুরু করে বিশিষ্টজনেদের নিয়ে প্রচার করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে পেল্লায় মাপের বক্স (ডিজে) যাতে কোথাও না বাজে, তা-ও নজরদারিতে রাখতে বলা হয়েছে বাহিনীকে। তবে অন্য বারের তুলনায় এ বার বাজি বাজেয়াপ্ত কম হয়েছে বলে সূত্রের খবর। কত বাজি বাজেয়াপ্ত হয়েছে, সোমবার রাত পর্যন্ত সেই হিসেব লালবাজারের তরফে মেলেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement